ঢাকা | এপ্রিল ১৯, ২০২৫ - ১:১১ অপরাহ্ন

ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় ওসিসহ ৪ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

  • আপডেট: Wednesday, April 9, 2025 - 11:33 pm

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় নাটোরের লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৪ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁদের জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এদিকে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।  বুধবার ওসিসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন। দায়িত্বে অবহেলার দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  নাজমুল হক, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাথী খাতুন, কনস্টেবল লতিফা খাতুন ও রাজিব। এদিকে গত মঙ্গলবার লালপুর থানা থেকে ছিনিয়ে নেয়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুবেল উদ্দিনকে (৩২) আবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। এ ছাড়া থানা থেকে আসামি ছিনতাইয়ে ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন লালপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা ওরফে মজনু পাটোয়ারী (৪৫), গৌরীপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে আসামি রুবেলের বোন রুপা খাতুন (২৫) ও ফারজানা ইয়াসমিন বৃষ্টি (২০)। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর ছিনতাইয়ের শঙ্কায় নাটোর সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়রামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদ চৌধুরীর বাড়িতে মধ্যরাতে গুলি ছোড়ার ঘটনায় করা মামলায় গতকাল বিকেলে বাগাতিপাড়া ও লালপুর থানা-পুলিশ রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে বাগাতিপাড়া থানায় নেওয়ার প্রস্তুতিকালে ছাত্রদল ও যুবদলের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী থানায় হাজির হয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয়ার জন্য পুলিশকে চাপ দেন। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রুবেলকে থানা হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান তাঁরা।

আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় বাগাতিপাড়া থানার এসআই মানিক কুমার চৌধুরী বাদী হয়ে গতকাল রাতে লালপুর থানায় একটি মামলা করেন। এতে লালপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল্লাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের ছেলে আবু রায়হান সুইটকে (৩০) প্রধান আসামি করে ৩৮ জন এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১২০ জনসহ মোট ১৫৮ জনকে আসামি করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া আসামিসহ এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে যৌথ বাহিনী রাতেই অভিযান শুরু করে। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, যারা সরকারি কাজে বাধা দিয়ে আসামি ছিনতাই করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনার তদন্তে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের প্রচার সম্পাদক শরীফ প্রধান শুভকে দায়িত্ব দেয়া হলো। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সংসদ বরাবর লিখিত আকারে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হলো।