রুয়েট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: চাকরি দেয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই কর্মকর্তার নাম মানিকুজ্জামান মানিক। তিনি রুয়েটের সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব)। একই মামলায় তার ভাই মুনজুরুজ্জামান মুনকেও আসামি করা হয়েছে।
প্রতারণার একই অভিযোগ তার বিরুদ্ধেও। গত শুক্রবার রাতে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন তামান্না ইয়াসমিন (৩০) নামের এক ভুক্তভোগী নারী। তার বাড়ি নগরের রানীনগর সাধুরমোড় এলাকায়।
মামলায় তামান্না অভিযোগ করেছেন, মানিক ও মুন তাদের এলাকায় বসবাস করেন। এ কারণে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুযোগে তারা রুয়েটে চাকরি দেওয়ার নামে ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। দিনের পর দিন ঘুরিয়েও তারা টাকা ফেরত দেননি।
এজাহারে বলা হয়, মানিক ও মুন বাদী তামান্নার মা নওবাহার খাতুন ও তার স্বামী শাহীকে রুয়েটে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে চাকরি পেতে হলে টাকা দিতে হবে বলে তারা জানান। সরল বিশ্বাসে তামান্না ইয়াসমিন ২০২২ সালের ৯ মার্চ ৪ লাখ ও ১৬ মার্চ ১ লাখ টাকা দেন দুই ভাইকে। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তারা চাকরি দিতে পারেননি, টাকাও ফেরত দেননি।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা ২০২২ সালের ২ জুন আশরাফ উজ জামান নামের অপর এক ব্যক্তির কাছে জমি বিক্রির কথা বলে ৬ লাখ টাকা নেন। এই ব্যক্তিকে জমিও দেওয়া হয়নি, টাকাও ফেরত দেয়া হয়নি।
এছাড়া গত বছরের ১০ জানুয়ারি সঞ্জু নামের আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের বিপরীতে ৬ লাখ টাকা এবং ২৯ ডিসেম্বর মামুনুর রশিদ নামের আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে চেকের বিপরীতে ১ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। অভিযুক্ত মানিক ও মুন মোট ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এজাহারে বলা হয়, প্রত্যেকেই দুই ভাইয়ের কাছে টাকা ফেরত চাইলেও কাউকেই দেওয়া হয়নি। ইদানিং টাকা না দিয়ে পাওনাদারদের হুমকি-ধমকি দেয়া শুরু করেছিলেন দুই ভাই। হুমকি-ধমকি দেওয়ার ঘটনায় থানায় গত ১০ মার্চ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। নানাভাবে চেষ্টা করেও টাকা আদায় করতে না পারে এই মামলা দায়ের করা হলো।
মামলার বিষয়ে কথা বলতে রুয়েট কর্মকর্তা মানিকুজ্জামান মানিকের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি বাদী তামান্না এ অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সেদিন মানিকুজ্জামান মানিক বলেছিলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে নয়; টাকা তিনি ধার নিয়েছেন। পরিশোধ করে দেবেন।
মামলার বিষয়ে মানিকের ভাই মুনজুরুজ্জামান মুন বলেন, ‘চেকের বিপরীতে যে টাকা নেয়া হয়েছে, সেটা ফেরত দেয়া হবে। এর বাইরে কোনো লেনদেন নেই। আর আমার ভাই চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেয়নি। আমাদের এখন অভিযোগ-মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে।’
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, ‘মামলাটি তদন্তের জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’