পৃথক ঘটনায় ট্রেনের ধাক্কায় চারজন, সড়কে দু’জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: পৃথক ঘটনায় রাজশাহীর বেলপুকুরে ট্রেনের ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী ও পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেনের ধাক্কায় নানা-নাতনির মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, নাটোরের প্রালালপুরে ইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে বাবা ও মেয়ে নিহত হয়েছেন।
জানা যায়, গত বুধবার রাজশাহীর বেলপুকুর রেলগেট এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, নাটোর সদর থানার চাঁদপুর বাজার এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মিজানুর (৩৩) ও একই এলাকার সোলাইমানের ছেলে জহুরুল (৩৫)।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বেলপুকুর রেলগেট এলাকায় পঞ্চগড় থেকে রাজশাহীগামী বাংলাবান্ধা ট্রেন একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মিজানুর ও জহুরুলের মৃত্যু হয়। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলার করার প্রস্তুতি চলছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেনের ধাক্কায় নানা-নাতনির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঈশ্বরদী-খুলনা রেলপথের ঈশ্বরদী উপজেলার উত্তর বাঘইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- বাঘইল উত্তরপাড়া এলাকার মৃত রহমত সরদারের ছেলে বাবুল হোসেন সরদার (৫৫) ও উপজেলার চরমিরকামারী গ্রামের ইসমাইল হেসেনের মেয়ে মুনতাহা (৫)। সম্পর্কে তারা নানা-নাতনি। স্থানীয় বাসিন্দা রিমন হোসেন জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়ির পাশে রেললাইনে বসেছিলেন নানা-নাতনি।
এসময় ঈশ্বরদী থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা অভিমুখী ট্রেনের একটি ইঞ্জিন তাদের ধাক্কা দেয়। এতে রেললাইনের পাশে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাবুল সরদার। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে শিশু মুনতাহারও মৃত্যু হয়। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। তবে এটি রেলওয়ে থানার আওতাধীন। তারা বিস্তারিত বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ওসি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোরের প্রালালপুরে ইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে বাবা ও মেয়ে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীসহ আরও দুজন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে পাবনা-বনপাড়া মহাসড়কের কদিমচিলান গোধড়া এলাকায় জাহিদ অটোরাইচ মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- বগুড়া সদর এলাকার কৈপাড়া আবুল কশেমের ছেলে শাহারিয়ার শাকিল (৩৫) ও তার দুই বছরের শিশু মেয়ে সামাইরা খাতুন। আহতরা নিহত শাকিলের স্ত্রী আয়শা আক্তার রুনী (২৬) ও প্রাইভেটকারচালক।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি ইসমাইল হোসেন তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় ও বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে প্রাইভেটকারটির যশোর থেকে বগুড়া যাওয়ার পথে লালপুরের কদিমচিলান গোধড়া গ্রামে জাহিদ অটোরাইচ মিলের কাছে পৌঁছালে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশাকে রক্ষা করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে বাবলা গাছের সঙ্গে ধাক্কা দিলে প্রাইভেটকারটির দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত শাকিলের স্ত্রী আয়শা আক্তার রুনী বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং আহত প্রাইভেটকারের চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, নিহত শাকিল ঈদের ছুটিতে ভাড়া করা একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তার কর্মস্থল যশোর থেকে স্ত্রী-সন্তানকে সাথে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বগুড়া সদর থানার কৈপাড়া গ্রামে ফিরছিলেন। বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।