বাউত উৎসবে মেতেছে শৌখিন মৎস্য শিকারিরা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ফুলঝোড় নদীতে ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসবে মেতে উঠেছেন সৌখিন মৎস্য শিকারিরা।
উৎসব আমেজে দেশিয় প্রজাতির মাছ যেমন- বোয়াল, শোল, কৈ, গুজা, চিতল, রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে আনন্দে বাড়ি ফেরেন তারা। করতোয়া, ফুলঝোড়, হুরাসাগর, গোহালা নদী বেষ্টিত শাহজাদপুর এবং চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিল ঝিলের মাছ শিকার করা এলাকার অপেশাদার ও শৌখিন মাছ শিকারিদের রেওয়াজ হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে নদী-নালার পানি যখন কমে যায় তখন একটি দিন নির্ধারণ করে বিভিন্ন গ্রাম থেকে শৌখিন মাছশিকারিরা সমবেত হয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন। শাহজাদপুরে বিভিন্ন নদ-নদীতে দেশিয় মাছের প্রাচুর্যের কারণেই বিভিন্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ শিকার করতে আসা লোকজন জমিয়ে তোলে মাছ শিকারের ক্ষেত্রগুলো। মাছ শিকারের এ উৎসবই স্থানীয়ভাবে লোকজনের কাছে পলো বা বাউত উৎসব নামে পরিচিত।
সুদূর অতীতে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পরেই বিভিন্ন জলাশয়ে দলবদ্ধ হয়ে গ্রাাম বা এলাকাবাসী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে মাছ শিকার করতে যেতেন। মূলত একটি জলাশয়ে যখন গ্রামের কিংবা এলাকার শত শত লোকজন একই সঙ্গে একই স্থানে মাছ শিকারে নেমে পড়েন, তখন জলাশয়ের পানি ঘোলা হয়ে যেত। আর এতে করে ওই জলাশয়ে থাকা মাছগুলো ভেসে উঠত। আর তখনই মাছ শিকারিরা মনের আনন্দে মাছ শিকার করে খালই বা পাতিলে ভরে বাড়িতে ফিরত।
এই হলো বাউত বা পলো উৎসবের আনন্দ। মাছ পাওয়া যাক আর না যাক বাউত বা পলো উৎসব এ অঞ্চলের একটি ঐতিহ্য। তবে বাউত উৎসব বর্তমান সময়ে আগের মতো সংখ্যায় বেশি না হলেও এটিকে অতীত-ঐতিহ্য হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। এখনও শাহজাদপুরের বিভিন্ন নদ-নদীতে পলো উৎসব চোখে পড়ে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ধ্বনিত হয় মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী কলরব।