ঈদযাত্রায় উত্তর-দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষের ভোগান্তি কমছে

সোনালী ডেস্ক: এবার ভোগান্তির শঙ্কা নেই সিরাজগঞ্জের ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে। কারণ ঈদের ১০ দিন আগে যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে নির্মিত ১১টি উড়াল সেতুর মধ্যে নয়টি ও হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের সার্ভিস সড়ক খুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চারলেন চালু হওয়ায় সুফল পাবে ঈদে ঘরমুখী মানুষ।
বিগত সময়ে এই সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেলেও এবার ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য ঈদযাত্রা ভোগান্তিমুক্ত ও স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছে হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
হাইওয়ে পুলিশ এবং সওজ সূত্রে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে যমুনা সেতু হয়ে প্রতিদিন উত্তরের ১৬টি ও দক্ষিণের পাঁচটি জেলার প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। ঈদ আসলেই যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে বিপুল সংখ্যক গাড়ি একসঙ্গে সেতু পার হতে গিয়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
ফলে ভোগান্তির শিকার হন ঘুরমুখী মানুষজন। সাধারণ মানুষ যেন স্বস্তিতে ঈদযাত্রা করতে পারে সে লক্ষ্যে প্রতিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। এবারও কয়েকটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এবারের উদ্যোগগুলো হলো- হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা, যানজট নজরদারিতে সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের ব্যবহার এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে চলাচলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
এর ফলে বিগত ঈদযাত্রার মতো এবার যানজট হবে না বলে আশা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে আসছে ঈদুল ফিতরে উত্তরের ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা এক দশকের মধ্যে এবার হবে সবচেয়ে আরামদায়ক ও স্বস্তির হবে। জেলা পুলিশ বলছে, যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়ক, হাটিকুমরুল-বনপাড়া, ঢাকা-বগুড়া ও ঢাকা-পাবনা মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের ৮৮ কিলোমিটার মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে গঠিত কমিউনিটি পুলিশও কাজ করবে। এতে সড়কে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দ্রুত সরিয়ে নেয়া হবে।
এবারের ঈদযাত্রা সবচেয়ে আরামদায়ক ও স্বস্তির হবে উল্লেখ করে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরে উত্তরের ঈদযাত্রা হবে সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক। এই ঈদে একসঙ্গে সবার ছুটি এবং বাড়ি যাওয়ার জন্য সড়কে একটু চাপ থাকলেও কোনও যানজট থাকবে না।
এজন্য জেলা পুলিশ ও সড়ক বিভাগের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে। যানজট এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন যমুনা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল হক পাভেল। তিনি বলেন, সেতুতে যানজট এড়াতে উভয় পাশে ১৮টি টোল বুথ থাকবে। যার মধ্যে মোটরসাইকেলের জন্য ব্যবহৃত হবে চারটি।
সেতুর ওপর কোনও গাড়ি বিকল হলে ও দুর্ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থলে রেকার নিয়ে যেতে বেশ সময় লাগে। এজন্য সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশে দুটি রেকার ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি থাকবে। সবমিলিয়ে এবার উত্তরের ঈদযাত্রা হবে সবচেয়ে স্বস্তির। সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, এবার উত্তরের ঈদযাত্রায় চারলেনের মহাসড়কের সুফল পাবে মানুষ।
বর্তমানে মহাসড়কের অবস্থা আগের যেকোনো সময়ের চেয়েও ভালো রয়েছে। মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ চলছে। আশা করছি, লেন মেনে যানবাহন চলাচল করলে ঈদে ঘরমুখো মানুষের কোনও ভোগান্তি হবে না।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখতে কাজ করছি। এ বছর ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। সবাইকে যানজটমুক্ত মহাসড়ক উপহার দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।
মহাসড়কের কোথাও যানবাহন দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। কোনও যানবাহন বিকল হলে দ্রুত সরিয়ে মহাসড়ক সচল করা হবে। এজন্য উদ্ধারকারী রেকার ও চেইন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে থাকবে। প্রস্তুত থাকবে উদ্ধারকারী টিমও।