মধ্য রমজানেও জমেনি নিউ মার্কেটের ঈদের কেনাকাটা

কবীর তুহিন: ঈদ মানেই নতুন কাপড় পরার আনন্দ। আর কেনাকাটার ধুম। ঈদুল ফিতরের এখনও বাকি ১৭ দিন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে গতকাল শুক্রবার নিউমার্কেটে যে পরিমাণ ভিড় থাকার কথা, তেমন ভিড় চোখে পরেনি।
রাজশাহী নগরীর নিউমার্কেটে সব ধরনের দোকান অনেক খোলামেলা হওয়ার কারণে এখানে এক শ্রেণির ক্রেতা রয়েছে, যারা নিউ মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন।
বিক্রেতারা আরও জানান, ঈদের আরও অনেক দিন বাকি থাকায় বেচাকেনা পুরোদস্তুর শুরু হয়নি। হয়তো বোনাস পেলে বেচাকেনা অনেক বাড়বে। নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের সার্বিক অবস্থায় গত দুই ঈদ বাজারের তুলনায় এবারে হয়তো ভালো ব্যবসা নাও হতে পারে, সেকথা মাথায় রেখেই যে পণ্যগুলো তাদের শোরুমে তুলেছেন তা ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।
নিউমার্কেটের বিগ বাজারের সিনিয়র সেল্স ম্যানেজার মানিক বলেন, এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রোজার আগেই ছুটি দেয়ায় নগরীতে ঈদের বেচাকেনায় অনেক প্রভাব পরেছে। আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ থেকে ১৫ রোজায় ছুটি হত।
তখন শিক্ষার্থীরা ছুটিতে বাসায় যাওয়ার সময় শহর থেকে ঈদের কেনাকাটা করে বাসায় ফিরতেন। এবার আগে ছুটি দেয়ায় নগরীতে কেনাকাটায় অনেক প্রভাব পরেছে।
বিশাল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী সেলিম রেজা দারা বলেন, নিউ মার্কেটের ঈদের কেনাকাটা তুলনামূলক এবার অনেক কম। বিশাল সেন্টারের পোশাকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেয়েদের থ্রি পিস, শিশুদের পোশাক, ছেলেদের শার্ট, গেঞ্জি ও ফতুয়া উল্লেখযোগ্য।
এবার পাকিস্তানি সাদা বাহারের মূল্যে ২ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার, ভারতের জয়পুরী কটন ৯শ থেকে এক হাজার দুই’শ, দেশী থ্রি পিস দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার বিক্রয় হচ্ছে।
বাচ্চাদের গেঞ্জি সেট ৭শ থেকে দেড় হাজার, বাচ্চা মেয়েদের ফ্রগ ৭শ থেকে আড়াই হাজার, বড়দের শার্ট ৮শ থেকে আড়াই হাজার, বড়দের গেঞ্জি ৭শ থেকে ৩ হাজার ২শ ও ফতুয়া ৫শ থেকে ১ হাজার ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিগবাজারের উল্লেখযোগ্য কাপড়গুলোর মধ্যে বাচ্চাদের ইন্ডিয়ার হীরা মান্ডি। এর দাম ৪ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। পাকিস্তানি আগা নূর থ্রি পিস ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে।
স্বপরিবারে বিগবাজারে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ইউসুফ বলেন, রাজশাহী নিউমার্কেটের পরিবেশ আগে থেকেই অনেক সুন্দর ও খোলামেলা। এখানে অনেক ভিড় থাকলেও সেটা সমস্যা না হওয়ায় অনেক সময় নিয়ে পছন্দের পোশাক কেনা যায়। সেই কারণে আমি প্রতি বছর এই নিউ মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করে থাকি।
কিডস পার্কের কর্মচারী মাহমুদ বলেন, তাদের দোকান কিডস পার্ক নামে পরিচিত হলেও তাদের এখানে মেয়েদের থ্রি পিস ও শাড়ির ব্যপক কালেকশন থাকলেও এবার ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম।
তিনি মনে করেন, ১৩ রোজাতেও নিউ মার্কেটের ব্যবসা জমে উঠেনি। তিনি বলেন, আমাদের এখানে নিম্নে ৭শ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায় বাচ্চাদের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। আর শাড়ি ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দামের সংগ্রহ আছে।
মিম কালেকশনের রনি বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার ঈদের কেনাকাটায় প্রভাব পরেছে। তাদের দোকানে মেয়েদের সব ধরনের পোশাকসহ শিশুদের অনেক কালেকশন রয়েছে। তিনি বলেন, নারীদের পাকিস্তানি কাপড়ের ওপর বেশি ঝোঁক।
এছাড়াও ভারতের কাপড়ের চাহিদা আছে। পাকিস্তান ও ভারতীয় ২ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা দামের থ্রি পিস মিম কালেকশনে রয়েছে। অন্যদিকে নিউ মার্কেটের জুতার দোকানগুলোয় বেচাকেনা নাই বললেই চলে।
সরজমিনে দেখা যায়, কেউ এসেছেন জুতার শো রুমগুলো ঘুরে দেখতে। কেউ বুঝতে এসেছেন দাম-দর। কেউ আবার বাজেটের মধ্যে পছন্দের জুতা স্যান্ডেল পেলে কিনে নিচ্ছেন।