দুর্গাপুর ও বাঘায় উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ওএমএস ডিলার নিয়োগ

দুর্গাপুর ও বাঘা প্রতিনিধি: প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন। তিনি প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় এলাকাবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছেন। জানা গেছে,
সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিনি হল রুমে লটারি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। পরে উপজেলা চত্বরে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে লটারিতে নির্বাচিত ডিলারদের নাম ঘোষণা করা হয়।
এতে স্বচ্ছ পদ্ধতিতে ডিলার নির্বাচিত হওয়ায় আবেদনকারীরা স্বস্তি প্রকাশ করেন। উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ইউএনওর এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। পরিবেশক নিয়োগের একজন প্রত্যাশী জানান, আমরা ভেবেছিলাম হয়তো সুপারিশ বা প্রভাব খাটানো হবে, কিন্তু ইউএনও স্যারের কারণে সব কিছু স্বচ্ছভাবে হয়েছে।
এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। যাচাই-বাছাই শেষে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়ে নওপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর বাজার পয়েন্ট এর সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলার রহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ প্রকাশের পরে অনেকেই তথ্য গোপন করে আবেদন করেছিলো কিন্তু ডিলার নিয়োগে শতভাগ যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ায় উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি। এই উদ্যোগকে উপজেলাবাসী দৃষ্টান্তমূলক বলে মনে করছেন।
তারা আশা করছেন, অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রশাসন এমন স্বচ্ছতা বজায় রাখবে। উল্লেখ্য, দুর্গাপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে ১৪ জনকে নির্বাচন করার কথা থাকলেও ১২জনকে নির্বাচন করা হয়েছে।
ডিলার নিয়োগে সরেজমিন যাচাই বাছাই করে প্রতিবেদন দেন ডিলার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করায় ছিল আমাদের লক্ষ্য। তাই সবার সামনে লটারি করে ডিলার নির্বাচন করা হয়েছে। যাতে কোনো অনিয়ম না থাকে।
বাঘা প্রতিনিধি জানান, স্বচ্ছতায় ও জবাবাদিহীতা নিশ্চিত করতে প্রকোশ্যে রাজশাহীর বাঘাতেও লটারির মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নির্বাচন করা হয়। স্বচ্ছতার সাথে প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ডিলার নির্বাচন করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মি আক্তার ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তাছলিমা খাতুনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন উপজেলার ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে খাদ্য বিভাগ এ ডিলার নির্বাচন কার্যক্রমের আয়োজন করে। ডিলার নির্বাচনে উন্মুক্ত এ লটারি অনুষ্ঠিত হয়। লটারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মামুনুর রহমান, উপজেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মনসুর আলী, বাঘা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা জিন্নাত আলী, বাঘা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফকরুল হাসান বাবলু, বাঘা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তফিকুল ইসলাম তফি, উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তমাল মিয়া, উপজেলা উপখাদ্য পরিদর্শক সাইদুজ্জামান প্রমুখ। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তাছলিমা খাতুন বলেন, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৪টি কেন্দ্রের বিপরীতে ৪৯ জন আবেদনপত্র জমা দেন।
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ৪৮ টি আবেদনপত্র বৈধ হয় ও ১ জনের আবেদনপত্র বাতিল হয়। পরে যে-সকল কেন্দ্রে একাধিক ডিলারশিপ প্রত্যাশী ছিলেন তাদের মধ্যে উন্মুক্ত লটারির আয়োজন করা হয়। এছাড়া ৩ কেন্দ্রে একাধিক বৈধ আবেদন না থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডিলারশিপ নির্বাচন পান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্যবান্ধব ডিলার নির্বাচন কমিটির সভাপতি শাম্মি আক্তার বলেন, অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরে ভাল লাগছে।