ঢাকা | জুন ৪, ২০২৫ - ৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

দেশব্যাপী নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঢাবিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিক্ষোভ

  • আপডেট: Sunday, March 9, 2025 - 4:54 pm

অনলাইন ডেস্ক: আজ দেশব্যাপী চলমান নারী নিপীড়ন ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক’।

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ’ শীর্ষক এ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম মাহবুব বলেন, ‘নারী উপদেষ্টারা কোথায়? তারা তো স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে পারেন। নারী বিচারক, আইনজীবীরা এটা করতে পারেন। কিন্তু ক’জন করছেন? দেশে কী ঘটছে, ওনারা কী সে ব্যাপারে সচেতন? ওনারা তো এগিয়ে আসতে পারেন, সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু সেরকম কোনো উদ্যোগ দেখছি না।’

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনায় তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন নারীকে হেনস্তা করার যে ঘটনা, সেটি আমাদের প্রক্টরের দেখা উচিত ছিল। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল আছে। কিন্তু উনি তা করেননি। যখন কোনো শক্তিশালী পদে রাজনৈতিক বিবেচনায় পদ দেওয়া হয়, তখন এমনই হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান, কবি ও লেখক ফেরদৌস আরা রুমি, সাফওয়ান আদনান প্রমুখ। সমাবেশে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা।

অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা যখন ঘটে, এটা এত নিষ্ঠুর যে আমরা কেবল ওই ঘটনার বিচার চাই। কিন্তু কেন এ ধরনের অপরাধ ঘটছে, তাতে আমরা নজর দেই না। এর কারণ হলো রাজনীতি, বৈষম্যমূলক অর্থনীতি ও নিপীড়নমূলক মনস্তত্ব। জুলাইয়ের পরে আমরা যে নতুন রাজনীতির সম্ভাবনা দেখছি, তা কিন্তু আসেনি। এটি ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাছে বেদখল হয়ে যাচ্ছে।

কবি ও লেখক ফেরদৌস আরা রুমি বলেন, আমাদের অনেক ভালো ভালো আইন আছে। কিন্তু তার কার্যকারিতা নেই। গবেষণায় এসেছে, একটি ধর্ষণের বিচার হতে ১৩ থেকে ১৫ বছর লেগে যায়। আবার যে ধর্ষণ করেছে, তার সাথে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও আছে। আমরা জানি না আছিয়া বেঁচে থাকলে তার পরের জীবন কেমন হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, পরিবার থেকে শুরু করে জনপরিসরে নারীদের ওপর যে নিপীড়ন, তা হঠাৎ করা হয়েছে বলার সুযোগ নেই। সমাজ  এই নির্যাতনকে নরমালাইজ করে। নির্যাতন হচ্ছে একধরনের ক্ষমতার বিস্তার। আমাদের গৃহভ্যন্তরে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন হয়। নির্যাতন করে চুপ করিয়ে রাখতে চাওয়া হয়। নারীদেরকেই প্রশ্ন করা হয়, তারা কেন পথে বের হলো। এটা নির্যাতনকারীদের সাহস দেয়।

সমাবেশে আরও উপস্থিতি ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া রহমান, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একইসাথে এই কর্মসূচি পালন করছেন।

 

সূত্র: বাসস

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS