সভাপতির পদ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার: পবায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় পবা উপজেলার বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে নওহাটা পৌর বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ডলার মাহমুদ বাদী হয়ে পবা থানায় চারজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক ডলার মাহমুদকে সভাপতি করে চার সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি অনুমোদিত হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অভিভাবক সদস্য সাদিকুল ইসলাম সরকার, শিক্ষক প্রতিনিধি কাজিমুদ্দিন ও পদাধিকার বলে সদস্য সচিব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক। এই কমিটিতে হাফিজুর রহমানও সভাপতির প্রার্থী ছিলেন। শিক্ষাবোর্ড হাফিজুর রহমারকে সভাপতি পদে অনুমোদন না দিলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দেখে নেওয়ার এবং অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির হুমকি দিতে থাকেন।
শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের মাসিক সভায় অংশগ্রহণের জন্য বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে হাফিজুরসহ তার পক্ষের লোকজন বাধা দেয়। পাশাপাশি তারা অফিসকক্ষসহ অন্যান্য শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং প্রধান শিক্ষককে তাড়িয়ে দেয়। এর প্রতিবাদ করলে হাফিজুর গং অতর্কিত হামলা চালায়। এমনকি বিদ্যালয় ত্যাগ না করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়। হামলায় চারজন আহত হয়। আহতরা হলেন, উজ্জল আলী, সুজন আলী, শাফিউল ইসলাম ও মফিজ উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, পবার বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কে হবেন- তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই নওহাটা পৌর বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করছিল।
এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন ডলার মাহমুদ। নতুন সভাপতি হওয়ায় তাঁকে নিয়ে শনিবার সকালে বই বিতরণ কার্যক্রমের বিষয়ে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিতি সভার আয়োজন করেন প্রধান শিক্ষক। এখবর পেয়ে আরেক পক্ষ মো. হাফিজুর রহমান মোল্লা গ্রুপের নেতাকর্মীরা গিয়ে স্কুলে জড়ো হন। একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে ডলার গ্রুপের সঙ্গে হাফিজুর গ্রুপের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ডলার গ্রুপের ৫ জন আহত হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণ আনে। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্কুল কমিটির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
বিষয়টি স্বীকার করে বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, নতুন সভাপতিকে নিয়ে বই বিতরণ কার্যক্রমের বিষয়ে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু দুপক্ষের মধ্যে মারপিটের কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ডলার মাহমুদ বলেন, ‘হাফিজুর রহমান মোল্লার লোকজন বিদ্যালয়ের বই বিতরণের বিষয়সহ শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিতি সভায় বাধা দিতে এসেছিল। আমরা প্রতিহত করতে গেলে সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান বলেন, প্রাপ্যদের পদে না দিলে স্থানীয়রা মেনে নিবে কেন। বরং পরিস্থিতি আন্দাজ করে তিনিই অনেককে মারপিটের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন বলে দাবি করেন।
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের সভাপতি ডলার মাহমুদ বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা হয়ত সমঝোতা করে নেবে।’