ঢাকা | মার্চ ৬, ২০২৫ - ৯:২৩ অপরাহ্ন

শিরোনাম

সংযোগ সড়ক না থাকায় ১৫ বছরেও এলাকাবাসী সেতুটি ব্যবহার করতে পারেনি

  • আপডেট: Thursday, March 6, 2025 - 2:08 pm

অনলাইন ডেস্ক: জনস্বার্থে নির্মিত সেতুর বয়স প্রায় ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুতে উঠতে পারেনি এলাকাবাসী। সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রামবাসী। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের কলমা ইউনিয়নের মোহনতলা বাজারের পাশে নির্মিত হয়েছে এ সেতু। মূলত নির্মাণের পর সেতুর সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সেতুটি এলাকার কোনো উপকারেই আসেনি বরং দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোহনতলা বাজারের সামনে বাজুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মোহনতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝামাঝি এলাকায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। যেটির দুই প্রান্তের কোনটাতেই নেই সংযোগ সড়ক। ফলে সেতুটি নির্মাণ হওয়ার পর থেকে ব্যবহার করত পারেনি এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, হাওড় এলাকা হওয়ায় সেতুটির নিচ দিয়ে বছরের ছয় মাস পানি থাকে। আর ছয় মাস শুকনো থাকে।

শুকনো  মৌসুমে এটি বিকল্প রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেতু থাকা সত্বেও বর্ষাকালে এলাকাবাসী সেতুটি ব্যবহার করতে পারেন না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণকালে পার্শ্ববর্তী খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও সেসময় তাদের দাবী উপেক্ষা করে এখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১৫ বছর আগে প্রায় ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রিয়াঙ্কা এন্টারপ্রাইজ সেতু নির্মাণের কাজ করে। সেতু নির্মাণের পরপরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গেলে আর কোনোদিন এখানে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়নি। যার ফলে ২৩ লক্ষ টাকার সেতু অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সেতুটি এলাকার কোনো উপকারেই আসেনি বরং দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুটি নির্মাণকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে একাধিকবার ব্রীজটি এখানে নির্মাণ না করার কথা বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। সেতু থাকা সত্বেও বর্ষাকালে যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামবাসী মিলিতভাবে চাঁদা তুলে স্কুলে ও বাজারে যাতায়াতের জন্য প্রতিবছর দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

সাপান্তর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবেন্দো সাহা জানান, এই সেতুটি প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে বানানো হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত গ্রামবাসী এটি ব্যবহার করতে পারেনি। এই সেতুর দুই পাশে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। যেখানে শত শত ছাত্র-ছাত্রী বর্ষাকালে অনেক কষ্টে চলাচল করে। সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করে সংযোগ দিলে গ্রামবাসী উপকৃত হবে।

মোহনতলা বাজারের ব্যবসায়ী প্রীতি রঞ্জন দাস জানান, এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন এটা ব্যবহার তো হচ্ছে না, শুধু দেখে দেখে বছরের পর বছর সময় যাচ্ছে। এমন একটা সেতু তৈরি হয়েছে যার দুই পাশে মাটি নাই, সংযোগ নাই, কিভাবে ব্যবহার করবে মানুষ। বর্ষাকাল আসলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে বাজারে আসা যাওয়া করে, অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচে নির্মিত পাকা সেতু মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে।

অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মজনু মিয়া জানান, আমি এখানে আসার অনেক আগেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। শুনেছি, এখানে বর্ষায় খালে প্রচণ্ড স্রোত থাকার কারণে সংযোগ সড়কে মাটি থাকে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

সূত্র: বাসস