ঢাকা | মার্চ ৬, ২০২৫ - ৩:৫০ অপরাহ্ন

২ সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে প্রাণ গেল মায়ের

  • আপডেট: Thursday, March 6, 2025 - 12:50 am

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই শিশুসন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে এক মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের আসনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ ওই এলাকার কৃষক জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী আদিলা বেগম (৪০)। তিনি পাঁচ সন্তানের জননী। এ সময় আগুনে দুই সন্তানসহ পাঁচজন আহত হয়েছে। এ ছাড়া আগুনে ওই গ্রামের সাতটি কৃষক পরিবারের ২৭টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মারা গেছে ২০টি হাঁস-মুরগি ও পাঁচটি ছাগল।

ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সাঁড়া ইউনিয়নের ফুটবল মাঠের পাশে আসনা গ্রামের কৃষক জিয়াউলের বাড়িতে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এলাকাটি ঘনবসতি হওয়ায় দ্রুত আগুনের লেলিহান শিখা একে একে পার্শ্ববর্তী সাত কৃষকের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে।

এলাকাবাসী আগুন নেভাতে চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী, নাটোরের লালপুর, পাবনাসহ ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট এসে আগুন নেভাতে অংশ নেয়। এরপর বেলা ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও দমকল বাহিনীর ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মীর আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বেলা ১১টা ২০ মিনিটে মোবাইলে খবর পাই। এরপর ঈশ্বরদী শহর, ঈশ্বরদী ইপিজেড, লালপুর, পাবনাসহ ছয়টি ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসে আগুন নেভাতে কাজ করেছে।

সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শহিদুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পরপর স্থানীয় মানুষজন তা নেভাতে সচেষ্ট হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে পাশে গ্যাসের চুলা ছিল।

গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে শহিদুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পর নিজ শোবার ঘরে আটকা পড়েছিল তার দুই শিশুসন্তান। তাদের একজনের বয়স তিন ও আরেকজনের পাঁচ বছর। আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে আদিলা খাতুন তার ঘর থেকে বের হয়ে যান।

এরপর যখন দেখেন, তাদের সন্তান নেই, তারা ওই ঘরে আটকা পড়েছে, তখন তিনি দুজনকে আগুন থেকে বাঁচাতে অগ্নিদগ্ধ ঘরের ভেতরে যান এবং দুজনকে উদ্ধার করে বাইরে আনলেও আগুনে তার পুরো শরীর দগ্ধ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে উন্মুক্ত জায়গায় নিয়ে আসার আগে তিনি মারা যান। সচিব আরও জানান, ঘটনার পর ঈশ্বরদীর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।