ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীতে বন্যার পর বৃষ্টিপাত রোধে ক্লাউড সিডিং শুরু

অনলাইন ডেস্ক: কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার আশেপাশে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা রোধে মেঘ নিয়ন্ত্রনের লক্ষে ক্লাউড সিডিং শুরু করেছে। মঙ্গলবার বন্যার পানিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।
জাকার্তা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের আবাসস্থল জাকার্তা এবং পার্শ্ববর্তী উপ-শহর বোগোর, বেকাসি এবং তানগেরাং-এ বন্যায় কবলিত হয়।
মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে বেশ কয়েকটি নদীর পানি তিন মিটার উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং ১ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ডুবে গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ১১ মার্চ পর্যন্ত রাজধানী এবং এর আশপাশের বিভিন্ন শহরে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্লাউড সিডিং হচ্ছে বৃষ্টি প্ররোচিত করার জন্য প্লেন ব্যবহার করে মেঘের মধ্যে লবণ বা অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য ছড়িয়ে দেয়ার অনুশীলন, যা শনিবার পর্যন্ত চলবে এবং পশ্চিম জাভা প্রদেশের পাহাড়ী এলাকায় ক্লাউড সিডিং এর উপর গুরুত্ব দেয়া হবে। কারণ এখানে ভারী বৃষ্টিপাত হলে জাকার্তাসহ নিকটবর্তী শহরগুলোতে বন্যা হতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থার প্রধান দ্বিকোরিতা কর্ণওয়াতি বলেন, ‘আমরা মেঘগুলোকে খুব বেশি বড় হতে দিতে পারি না, তাই আমরা এটিকে ধীরে ধীরে নামিয়ে দেব।’
দ্বিকোরিতা মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ’আমাদের সতর্ক থাকা দরকার… তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন বৃষ্টিপাত কিছুটা হ্রাস করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ’আমরা বৃষ্টি ঠেকাতে পারব না — এটা অসম্ভব — কিন্তু আমরা তীব্রতা কমাতে পারি।’ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্যার কারণে কমপক্ষে ২ হাজার ২০০ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
উদ্ধারকারীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রাবার নৌকা মোতায়েন করেছে যারা তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি তাদের সাহায্য করার জন্য।
নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বর্ষাকালে নিম্নাঞ্চলীয় এই শহরটি বন্যার ঝুঁকিতে থাকে।
২০২০ সালে, মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা এবং ভূমিধসের সৃষ্টি হয় যার ফলে জাকার্তা এবং এর আশেপাশে প্রায় ৭০ জন মারা যায়, এবং আরো হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়।
সূত্র: বাসস