ঢাকা | মার্চ ৬, ২০২৫ - ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

মানব পাচারের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

  • আপডেট: Wednesday, March 5, 2025 - 10:45 pm

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে ১ লাখ টাকা বেতনের প্রলোভন দিয়ে সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নয়ন নামে এক যুবককে সৌদি আরবে পাচারের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর নামে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নয়নের বাবা আলাউদ্দিন সরদার।

২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আসামিরা যোগসাজসে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার পর ছেলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হওয়ায় ছেলের খবর পাওয়ার জন্য আসামিদের দ্বারস্থ হয়। তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আরো ২ লাখ টাকা দাবি করেন আলাউদ্দিনের কাছে।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ছেলেকে উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আলাউদ্দিন বাদি হয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে নওগাঁ মানব পাচার অপরাদ দমন ট্রাইবুনাল-১ আদালতে মামলা দায়ের করেন।

জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আলাউদ্দিন (৪৫) এর ছেলে নয়ন সরদারকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য একই গ্রামের ইব্রাহীম মন্ডলের ছেলে সানোয়ার মন্ডল (৪২) ও তার স্ত্রী সুরমা বানু (৩৫) যোগ সাজসে নানা ধরনের প্রলোভন দিয়ে মাসে ১ লাখ টাকা বেতন পাবে এমন রসালো গল্প শুনিয়ে আসামিরা আলাউদ্দিনের কাছ থেকে তার ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর নাম করে দুই দফায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

এই টাকা পরিশোধ করতে আসামী সানোয়ার তার বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা নেয়ার ব্যবস্থা করে। আসামিরা আলাউদ্দিনেরর ছেলে নয়নকে বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করলে ২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে পাঠিয়ে দিলে সেখানে অবস্থানরত আসামির লোকজন নয়নের কাছ থেকে পাসপোর্ট ভিসার সমস্ত কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে একটি অন্ধকার ঘরে আটক রাখেন।

কাজের কথা বললে মারপিট করে মুক্তিপণ হিসেবে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করেন। একই সাথে সকল পর্যায়ের কাগজপত্র ফেরত না দিয়ে অন্য দেশে পাচার করে দেয়ার হুমকি দিত আসামিরা। ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় বাদী ও তার পরিবার অজানা আতঙ্কে ভুগছে।

হঠাৎ করে গত ২৮ জানুয়ারি বাদীর মোবাইলে তার ছেলে নয়ন কান্না বিজড়িত কণ্ঠে ফোন করে বলেন, আমাকে আটকে রেখে দফায় দফায় মারপিট করা হচ্ছে। পাসপোর্টসহ সমস্ত কাগজপত্র আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। আরো ২ লাখ টাকা না দিলে অন্যত্র পাচার করে দেয়া হবে।

এমন কথা শোনার পর নয়নের বাবা আলাউদ্দিন বাদী হয়ে সানোয়ার মন্ডল ও তার স্ত্রী সুরমা বানুকে আসামি করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর মানব পাচার অপরাধ ট্রাইবুনাল-১ আদালতে মামলা করা হয়। বিজ্ঞ আদালত প্রয়োজনীয় তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নওগাঁকে নির্দেশ দেন।

সানোয়ার মন্ডল জানান, আমি টাকা নিয়ে নয়নকে যথারীতি বৈধভাবে পাসপোর্ট ভিসা দিয়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছি। সেখানে কাজকাম করছে এবং ভালো আছে। আমার বিরুদ্ধে মানব পাচারের যে মামলা করা হয়েছে তা মিথ্যা।

মামলার তদন্তকারি অফিসার তারেকুল সরকার জানান, কোটের নির্দেশ মোতাবেক এই মামলা তদন্ত করার জন্য আমি ঘটনাস্থলে গেছিলাম। তদন্ত কাজ অব্যাহত আছে।