ঢাকা | মার্চ ৫, ২০২৫ - ৪:২৩ পূর্বাহ্ন

দারিদ্র্যতা দূর করতে যাকাত ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার বিকল্প নেই -অধ্যাপক মজিবুর রহমান

  • আপডেট: Tuesday, March 4, 2025 - 10:37 pm

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, নামাজ রোজার মতই যাকাত আদায় করা একটি ফরজ ইবাদত।

একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ ও রোজার ফরজ বিধানকে আমরা সঠিকভাবে পালন করলেও যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অথচ দারিদ্র্যতা দূর করতে যাকাত ভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার বিকল্প নেই।

যাকাত হলো সম্পদের পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধি অর্জন করার সর্বোত্তমপন্থা এবং এটা দরিদ্র ও হতবঞ্চিতদের হক। এই হক তাদের কাছে নির্ধারিত নিয়মে পৌঁছানো জরুরি।

পবিত্র কুরআনে যেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে নামাজের কথা বলা হয়েছে, সাথে সাথেই যাকাতের কথাও সেখানে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে যাকাত প্রদানের ৮টি খাত রয়েছে। সুতরাং সম্পদশালী ব্যক্তিকে ঈমানদার হতে গেলে অবশ্যই তার সম্পদের যথাযথ হিসাব করে নির্ধারিত যাকাত দিতে হবে।

যাকাত ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্যেই আর্ত-মানবতার অর্থনৈতিক মুক্তি রয়েছে। আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই যাকাত ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি সাহেবে নেসাব গনকে রমজানের শুরুতেই যাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত বন্দিগীতে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান।

গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নগরীর শাহ ডাইন কনভেনশন হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত সমাজ উন্নয়ন ও আত্মশুদ্ধিতে যাকাত ও রমাদান শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, প্রফেসর ড. আবুল হাশেম, ডাঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. বিলাল হোসাইন।

মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান, মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ হাসানুজ্জামান হাসু, বিশিষ্ট ব্যাংকার ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের রাজশাহী জোনের ইনচার্জ নুরুল আমিন।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য সারওয়ার জাহান প্রিন্স, অধ্যাপক মাইনুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন সরকার, আশরাফুল আলম ইমন, তৌহিদুর রহমান সুইট, মাওলানা রুহুল আমিন, কামরুজ্জামান সোহেল, হাফেজ নুরুজ্জামান, সালাউদ্দিন আহমদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক ড. বিলাল হোসাইন বলেন, যাকাত ইসলামী অর্থব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের জনসাধারণের প্রায় ৯০% মুসলিম। অথচ দেশে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান হ্রাস না পেয়ে বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে সমাজকে মুক্ত করতে ইসলামী শরী’আতের নির্দেশিকা পূর্ণ অনুসরণ করে যাকাত ভিত্তিক ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

যাকাতের সুষ্ঠু বিলি বণ্টনের মাধ্যমে ত্রাণ, পূনর্বাসন, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ক্ষুদ্র ঋণ বাস্তবায়ন প্রকল্প ও শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন ও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে।

অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন, যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি চালুর মাধ্যমে সুদমুক্ত বাংলাদেশ গঠন হবে। সুদ ব্যবস্থায় মানুষ শোষিত হয়। যাকাত ব্যবস্থায় মানুষের সম্পদের পরিশুদ্ধতা হয়।

শুধুমাত্র যাকাত ও ওশর আদায়েই নয়, প্রত্যেক মুসলিমকে দ্বীন কায়েমের জন্য তার মাল ও জান কুরবানির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যাকাত আদায় যেভাবে ফরজ। একই ভাবে দ্বীন কায়েম করাও ফরজ। দ্বীন কায়েমের জন্য অর্থ, সম্পদ, মেধা, ঘাম, শ্রম ও সময় দিতে হয় এবং হবে।