ঢাকা | মার্চ ১, ২০২৫ - ৬:১৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রিকশাচালককে মারপিট করে ভাইরাল পবার সমাজসেবা কর্মকর্তা

  • আপডেট: Saturday, March 1, 2025 - 1:51 am

স্টাফ রিপোর্টার: পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রাসেলের বিরুদ্ধে একজন রিকশাচালককে জুতাপেটা ও লাঠি দিয়ে মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 শুক্রবার এমন একটি সিসি টিভি ফুটেজের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে ঘটনা গত ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরের। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই কর্মকর্তা নিজের পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালককে মারপিট করে। তারপর গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালককে লাঠিপেটাও করেন।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি রিকশায় চড়ে জাহিদ হাসান নগরীতে বাসার সামনে নামেন এবং ৩০ টাকা ভাড়া দেন। তখন ওই রিকশাচালক তাকে বলেন, বলে উঠবেন (ভাড়া ঠিক করে)। এ সময় জাহিদ হাসান বলেন, বলে উঠবোনি, কিন্তু ভাড়া ৩০ টাকার বেশি কেউ চায় না।’ এ সময় রিকশাচালক কিছু একটা বলেন।

তখন পেছনে ঘুরে এসে জাহিদ হাসান বলেন, আরেকবার বলতেছো কেন? আরেকবার বল।’ এরপরই তিনি পায়ের জুতা খুলে রিকশাচালকের মাথায় ও গালে মারতে থাকেন। হতবিহ্বল রিকশাচালক রিকশার ওপরেই বসে থাকেন।

জাহিদ হাসান এ সময় জুতা পরে নিয়ে পাশেই রাখা তার প্রাইভেটকারের দিকে যান। গাড়ির ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালককে মারতে থাকেন। কয়েকটি আঘাত রিকশায় লাগে। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, ‘আগা, আগা (চলে যা)। তখন রিকশাচালক রিকশা নিয়ে দ্রুত চলে যান।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে পবা উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে খোলা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জাহিদ হাসান নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

জাহিদ হাসান লেখেন, ‘আমি জাজেস কোয়ার্টার ফালগুনির তিনতলায় থাকি। রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর থেকে বাসায় গেটে এসে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়েছি। সে আরও ১০০ টাকা লুঙ্গি কিনতে চায়। আমি তাকে নাই বলে নিষেধ করি। সে বার বার বলে। শেষে ভাড়া দিয়ে নেমে আসার সময় আমাকে ছোট ছোট করে লাট সাহেব বলে গালি দিলে আমি পরবর্তী ঘটনা ঘটায়। যা আমি অত্যন্ত অন্যায় করেছি। পরবর্তীতে আমি রিকশায় বেত দিয়ে আঘাত করি। তারপরও সে ভয় পাই নাই।

জাহিদ হাসানের স্ত্রী রাজশাহীর একজন বিচারক। নগরীর রাজপাড়া থানা এলাকার ওই কোয়ার্টারে বিচারকেরা পরিবারসহ থাকেন। ওই ঘটনার ফুটেজ একজন বিচারক তার ব্যক্তিগত সিসি ক্যামেরা থেকে ফাঁস করেছেন বলে জাহিদ হাসান দাবি করেন। তিনি লেখেন, ঘটনার ফুটেজ ওই বিচারক সমাজসেবা অধিদপ্তরকে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তিগত ইস্যু বলে ‘ডিপার্টমেন্ট’ এগোয়নি। ওই বিচারক এটি ভাইরাল করেন বলে জাহিদ হাসান দাবি করেন।

বিষয়টি নিয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত আমিন আজিজ বলেন, ‘বিষয়টা অবশ্যই দুঃখজনক। সমাজসেবা অফিস অন্য ডিপার্টমেন্ট। তারপরও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন তারা যেভাবে চিন্তা করে সেভাবে করবে।

রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ রকম কোনো বিষয় তার জানা নেই। রিকশাচালক কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন বলেন, ‘ভিডিওটা একটু আগেই দেখলাম। বিষয়টা নিয়ে জাহিদ হাসানের সাথে কথা বলতে হবে। এখনও কথা বলিনি। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখি, আগে কথা বলি। আমাদের বিভাগীয় পরিচালক স্যার আছেন। আলাপ করে বিষয়টি দেখি।