রাজশাহীতে জাল কাগজে ফ্ল্যাট হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে জাল কাগজ তৈরি করে এক নারীর বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্যানভ্যালী লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছে।
আজ সকালে নগরীর একটি কনফারেন্স হলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে চাননি ওই নারী। ওই নারীর নাম সিনথিয়া সিফাত অনি।
সংবাদ সম্মেলনে স্যানভ্যালী লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মাহমুদ সনি লিখিত বক্তব্যে জানান, ২০১৪ সালে সিনথিয়া সিফাত তার প্রতিষ্ঠানে যান এবং জানান যে, তার লন্ডন প্রবাসী দাদু ক্যাপ্টেন মাহমুদুল আমিন তাকে একটি ফ্ল্যাট উপহার দিতে চান।
তিনি এই প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট কিনবেন। পরে ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মাহমুদুল আমিন ও সিনথিয়া সিফাত তাদের অফিসে যান এবং ক্রেতা হিসেবে অ্যাপার্টমেন্ট বুকিং ফরমে দুজনের নাম লেখেন। সেদিন মাহমুদুল আমিন ফ্ল্যাটের ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দেন।
পরবর্তীতে মাহমুদুল আমিন লন্ডন চলে যান এবং সিনথিয়া সিফাতের ব্যাংক হিসাবে টাকা পাঠান। চেকের মাধ্যমে সিনথিয়া সেই টাকা দেন স্যানভ্যালী লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানিকে। এরইমধ্যে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে আসে। কিন্তু দুই ক্রেতা একসঙ্গে এসে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি বুঝে নেননি।
লন্ডন থেকে মাহমুদুল আমিন ই-মেইলের মাধ্যমে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটিকে জানান, ওই ফ্ল্যাট যেন সিনথিয়াকে রেজিস্ট্রি দেয়া না হয়। তিনি তার সঙ্গে ফ্ল্যাট কিনবেন না। ফলে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটি ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি দিতে পারেনি। কিন্তু সিনথিয়া বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ দিয়ে ফ্ল্যাট নেয়ার চেষ্টা করেন। আশ্রয় নেন জালিয়াতিরও।
আসিফ মাহমুদ সনি জানান, ফ্ল্যাটের মালিক দুজন হলেও সিনথিয়া তার নামে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য চাপ দেন। কিন্তু মালিক দুজন বলে তারা তাকে একা ফ্ল্যাট দিতে পারেননি। ২০২৩ সালের এপ্রিলে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন তাকে ডেকে পাঠান।
তিনি গেলে ওসি তাকে একটি নোটারী পাবলিকের কপি দেন। এতে লেখা রয়েছে, মাহমুদুল আমিন দেশে এসে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাট সিনথিয়াকে বুঝিয়ে দিতে বলেছেন। ওসি তাকে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করার জন্য চাপ দেন। কিন্তু আসিফ মাহমুদ ওই স্ট্যাম্প নিয়ে আইনজীবীর কাছে গিয়ে জানতে পারেন, এটি জাল। স্ট্যাম্পে থাকা স্বাক্ষরও ওই আইনজীবীর নয়। এই জালিয়াতি ধরা পড়ার পরে আসিফ মাহমুদ সনি আদালতে মামলা করেন।
আদালত সিআইডিকে মামলা তদন্ত করতে দিয়েছেন। এখন সিনথিয়া সিফাত ডেভেলপার কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন বলে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মাহমুদ সনির।
তিনি বলেন, ‘ওই ভবনটিতে ৪৮টি ফ্ল্যাট ছিল। ৪৭টিই আমরা ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। সবাই সেখানে বসবাস করছে। একটি ফ্ল্যাটের মালিক সিনথিয়া ও মাহমুদুল আমিন দুজন। তারা একসঙ্গে না আসার কারণে রেজিস্ট্রি দেয়া যায়নি। ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
তাদের দেয়া টাকা দুজন একসঙ্গে এলে ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু তারা একসঙ্গে আসছেন না। সিনথিয়া সিফাত আমাদের প্রতিষ্ঠানের নামে অপপ্রচার করছেন।’