নেদারল্যান্ডের আলু ভ্যালেন্সিয়া বরেন্দ্রে চাষ করে লাভবান কৃষকরা

স্টাফ রিপোর্টার: বরেন্দ্র অঞ্চলে চাষ হচ্ছে লেদারল্যান্ডের আলু ভ্যালেন্সিয়া। স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তির এই জাতের আলু চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যেমন খরা ও লবণাক্ততা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণে অন্যতম বাঁধা। বাংলাদেশের খরা প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা অন্যতম। এসব এলাকায় সরকার অধিকতর গুরুত্ব দিতে কৃষির বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রেখেছে।
কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলায় স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগ করে বহির্বিশ্বের ন্যায় টেকসই কৃষির উন্নয়নে ঢাকা ব্যাংক পিএলসি এর সহযোগিতায় খরা প্রবণ এই সকল অঞ্চলে স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগ করে খরা সহনশীল শস্য বিন্যাস তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের ফলন বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ডঃ জুবায়ের আল মাহমুদ, এগ্রিকালচারাল বোটানি বিভাগের প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ মাহবুব ইসলাম ও কৃষি তত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড: মো: হাসানুজ্জামান।
এই স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি সমূহের মধ্যে রয়েছে খরা সহিষ্ণু, স্বল্প মেয়াদী, অধিক উৎপাদনশীল বিভিন্ন ফসলের উন্নত জাত। নেদারল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত ভ্যালেন্সিয়া আলুর জাতসহ বিনা সরিষা-৯, বিনা মসুর-৬ উন্নত জাতের খিরা ইত্যাদি। মাটির স্বাস্থ্য ও ঊর্বরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেঁচো সার, হিউমিক এসিড ইত্যাদি মাটিতে প্রয়োগ করা হয়েছে। অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে মালচিং ও মাচা পদ্ধতিতে শাক-সবজি চাষ।
এই প্রযুক্তি সমূহ টেকসই শস্যবিন্যাস তৈরিতে দুই উপজেলার ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি গ্রামে ৩০ টি প্রদর্শনী প্লটে প্রচলিত চাষাবাদ ও স্মার্ট প্রযুক্তির চাষাবাদের তুলনামূলক ফলাফলকে গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে ঢাকা ব্যাংক পিএলসি এর প্রকল্প বরাদ্দ হতে বিনামূল্য বীজ, সার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়াও এই আধুনিক কৃষি বিষয়ে কৃষকের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পে রবি মৌসুমে আলু, সরিষা, মসুর ও খিরা চাষ করা হচ্ছে।
বর্তমানে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মোহনপুরের কাজীপাড়া মাঠ থেকে আলু সংগ্রহ করা হচ্ছে । প্রদর্শনী প্লটের কৃষক জসিম উদ্দিন ও গোলাম মোস্তফার ক্ষেত থেকে আলু হারভেস্ট করে দেখা যাচ্ছে প্রচলিত জাত ও চাষাবাদ পদ্ধতির তুলনায় ফলন প্রায় ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ঢাকা ব্যাংক পিএলসি এর সিএসআর ফান্ড চলমান থাকলে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষতি মোকাবেলা, ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন সম্ভব হবে।
প্রদর্শনী প্লটের আলু চাষী কৃষক জসীম উদ্দীন ও গোলাম মোস্তফা জানান, সাধারণ আলুর চেয়ে নেদারল্যান্ডের ভ্যালেন্সিয়া জাতের আলুর ফলন বেশি। দেশি জাতের চেয়ে সময়ও কম লাগে। বিঘা প্রতি ফলন প্রায় ১০০ বস্তা। এতে করে আমরা কৃষকেরা লাভবান হচ্ছি।