ঢাকা | মার্চ ২, ২০২৫ - ১:১৬ পূর্বাহ্ন

কর্মবিরতি পালন করবে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ

  • আপডেট: Saturday, March 1, 2025 - 10:21 pm

সোনালী ডেস্ক: আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ আজ রোববার কর্মবিরতি পালন করবে।

শনিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি তথ্য সার্ভিসের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও সেবামূলক রাষ্ট্র গঠনে করণীয়’ বিষয়ে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান জানান, সম্প্রতি ফেসবুকে লেখালেখির মতো তুচ্ছ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

প্রশাসন ক্যাডার থেকে পক্ষপাতিত্বপূর্ণভাবে বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রোববার পরিষদভুক্ত সব ক্যাডার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবে। ওই দিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ৩০মিনিট পর্যন্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ দফতরের সামনে কালো ব্যাজ পরে ব্যানারসহ অবস্থান করবেন।

ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকে পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেও সিভিল সার্ভিসে পেশাদারত্বকে গুরুত্ব দিতে আহ্বান করা হয়েছে। অথচ জনদাবিকে উপেক্ষা করে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ক্ষমতাধর একটি গোষ্ঠীর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধির প্রয়াস দেখা গেছে।

এই প্রতিবেদন পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে এবং প্রশাসনিক ফ্যাসিজম আরও শক্তিশালী হবে। এ সময় বলা হয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার বহির্ভূত করার প্রস্তাব থেকে সরে এসে সুকৌশলে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রাখা হয়েছে।

যেন ধীরে ধীরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করা যায়। এছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের বিষয় সংস্কার প্রস্তাবে না রাখা এবং পরিসংখ্যান ক্যাডারকে অযৌক্তিকভাবে সার্ভিসের বহির্ভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে এসব সেক্টরে মেধাবীরা কম আকৃষ্ট হবে এবং এ সেক্টরগুলো মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।

প্রবন্ধ উপস্থানকালে আরও বলা হয়, কোনও ব্যক্তির মেধা যাচাইয়ের অন্যতম মাপকাঠি হলো গাণিতিক দক্ষতা। অথচ গণিতকে বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে মুখস্ত করার প্রবণতাকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, যা যথাযথভাবে মেধা মূল্যায়নের অন্তরায়।

এছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও জেলা পরিষদকে বিলুপ্ত করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, বাস্তবতা বিবর্জিত প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার প্রস্তাব জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায়।

সভায় পরিষদের পক্ষ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারসহ সব ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসে অব্যাহত রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রবেশের পর শুধু প্রশাসন ক্যাডারের জন্য আগের সার্ভিসে ফেরার সুবিধার প্রস্তাব বাতিল,

জেলা কমিশনারকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব বাতিল, এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের পরিবর্তে ভূমি সার্ভিস বা ভূমি ব্যবস্থাপনা সার্ভিস নামকরণ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় অথবা সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় হিসেবে নামকরণসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো. আরিফ হোসেন। এ সময় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।