ঢাকা | এপ্রিল ১২, ২০২৫ - ২:৩৩ অপরাহ্ন

সেনাবাহিনী সনাতনীদের পরম বন্ধু: পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ

  • আপডেট: Saturday, February 22, 2025 - 9:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: সনাতনী সম্প্রদায় সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। জন্মভূমি সব থেকে বেশি প্রিয়; পৃথিবীর সকল সনাতনী এটি বিশ্বাস করে। যারা সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, বাড়িঘরে হামলা করেছে তারা দুর্বৃত্ত। কোনো মসজিদের ইমাম কিংবা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এই হামলা চালায়নি। যারা হামলা করেছে তারা অপরাধী। তাদের বিচার করতে হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

গত শুক্রবার রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় অংশ নিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা এসব কথা তুলে ধরেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজশাহী মহানগর এলাকা ও বিভাগের বেশ কিছু জেলা-উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জানমাল রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সনাতনীদের পরম বন্ধু। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বর্তমান সময় পর্যন্ত যেভাবে সনাতনীদের যেভাবে সাপোর্ট দিচ্ছে তা অকল্পনীয়।

সভায় তৃণমূল পর্যায়ের সনাতন নেতৃবৃন্দ তাদের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। ৫ আগস্টের পর প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও পৌর এলাকায় কীভাবে হিন্দুদের ওপর হামলা, নির্যাতন হয়েছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, তাদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ-লুটপাটের ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এ-সংক্রান্ত জটিলতার সুরাহা চান তারা।

অনুষ্ঠানে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন মন্দির এবং হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা এবং নির্যাতনের কথা তুলে উপজেলার প্রতিনিধিরা বলেন, পূজা উদ্যাপন পরিষদ মানেই অনেকে ভেবে থাকেন আওয়ামী লীগ। এটি ভেবেই তারা আমাদের বাড়িঘর এবং মন্দিরে হামলা চালিয়েছে। তবে সেটি ঠিক না। আমাদের পরিচয় সনাতনী। এর বাইরে এই কমিটির কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। পূজা পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর প্রতিটি হামলার নথি সংগ্রহ করেন।

নিকটের থানায় যান, সেখানে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আদালতে যান। সেখানেও যদি মামলা না নেয়, আর্মি ক্যাম্পে যান, সেখানে আপনার কথা বলেন। তারপর সেখানেও যদি প্রতিকার না পান কেন্দ্রে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা সব ব্যবস্থা করব। ইতোমধ্যে আমরা কয়েকটি স্থানে এভাবে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সহযোগিতা করতে পেরেছি।

রাজশাহী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অম্বর সরকারের সভাপতিত্বে ও রাজশাহী মহানগর কমিটির সাবেক সভাপতি এডভোকেট শরৎ চন্দ্র সরকারের সঞ্চালনায় সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সিনিয়র সচিব অশোক মাধব রায়, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোপাল দেবনাথ, পদ্মাবতী দেবী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাগর হালদার, দীপক পাল, সহ-প্রচার সম্পাদক অনয় মুখার্জি, সদস্য লক্ষণ কুমার রায় প্রমুখ।

সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ সভায় অংশ নেন রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার ৬৭টি উপজেলা ও ৫৯টি পৌরসভার দেড় শতাধিক প্রতিনিধি। এর আগে সভার শুরুতে পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করা হয়। পরে মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে উপস্থিত সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।