শস্য ভাণ্ডার বদলগাছীতে ধান চাষে ব্যস্ত কৃষক

ইরি-বোরো মৌসুম
বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি: মাঘের শীতে বাঘ কাঁদে, আগের দিনে এমন প্রবাদ বাক্য থাকলেও এবার মাঘ মাসে নেই তেমন শীত, সকালেও নেই তেমন কুয়াশা বা হিমশীতল হাওয়া। এ কারণে আনন্দের সাথে বীজতলায় চারা উঠানো ও ইরি-বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর শস্য ভাণ্ডার খ্যাত বদলগাছী উপজেলার কৃষকরা।
সাথে কৃষক-কৃষাণীদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা। এ বছর মাঘ মাসে তেমন কোন শৈত্য প্রবাহ আর ঘন কুয়াশা না থাকায় ইরি-বোরো ধান রোপণে বিলম্ব হয়নি। তাই জমি প্রস্তুত করে পানি সেচ, হাল চাষ এবং বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণের কাজ চলছে। দিন ভর ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার চাষিরা।
এ এলাকায় এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হওয়াই আবারো বোরো চাষে কোমড় বেধে নেমেছে বদলগাছীর কৃষকরা। শ্রমিকেরা ধান রোপণের জন্য বিঘা প্রতি ১ হাজার ৫ শ থেকে ১ হাজার ৮ শ টাকা পর্যন্ত চুক্তি নিচ্ছেন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে।
দু-এক সপ্তাহের মধ্যে ধান রোপণের কাজ শেষ হতে পারে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ১১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার উপজেলায় রোপণ হচ্ছে উন্নত ফলনশীল ব্রিধান-৮৯, ৯২, ১০২, ১০৪, ১০৫, ৫৮, ৬৩, ৮১, ৮৪, ২৮, ২৯,ও জিরাশাইল, গোল্ডেন আতপ, কাঠারি জাতের ধান।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে এলাকার কৃষকদের বিভিন্নভাবে দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। করা হচ্ছে উঠান বৈঠক। সাথে মাঠপর্যায়ে পরামর্শও দেয়া হয়েছে। যেমন ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে চারা রোপণ করা, জমিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার ব্যবহার করা, ধান লাইন (১৫-২০ সেমি:দূরত্বে) রোপণ করা, প্রতি বিঘা জমিতে ৫টি করে খুটি পুতিয়ে পাখি বসানোর ব্যবস্থা করা (পার্চিং পদ্ধতিতে) একটি লাইনের পরপর আর একটি লাইন গ্যাপ দিয়ে চারা রোপণ করা। সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা।
উপজেলার কৃষক রহমান বলেন, গভীর নলকূপ গুলি যদি কৃষকদের মাঝে সমিতি করে ছেড়ে দেয়া হত, তাহলে সেচের মূল্য আরও কম হত, অনেক নলকূপ ব্যক্তি মালিকানায় চলছে তাই সেচের মূল্য বেশি দিতে হচ্ছে। এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ করেছি।
উপজেলার একাধিক কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার সেচ কমিটির নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বিঘা প্রতি পানি দাম ৫শ থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত বেশি নেয়া হচ্ছে। এতে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান বলেন, উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সব সময় কৃষকদের পাশে আছে। সব সময় মাঠে গিয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ধানের ভাল ফলনও হবে।