ঢাকা | মে ১৪, ২০২৫ - ১১:২৩ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহী কলেজের শহিদ মিনারকে দেশের ‘প্রথম শহিদ মিনার’ হিসেবে স্বীকৃতি দাবি

  • আপডেট: Thursday, February 20, 2025 - 9:49 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নির্মিত শহিদ মিনারকে দেশের প্রথম শহিদ মিনার হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি (আরসিআরইউ) কার্যালয়ে দেয়ালিকা উন্মোচন পূর্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি তোলেন। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহিদ দিবস উপলক্ষে ‘সত্যের কলমে একুশের প্রতিচ্ছবি’ শীর্ষক এ দেয়ালিকা প্রকাশ করে আরসিআরইউ।

মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি বলেন, দেশের প্রথম শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ রাজশাহীতে নির্মিত হয়েছিল। আমরা কয়েকজন মিলে রাজশাহী কলেজের মুসলিম হোস্টেলে ভাষা শহিদদের স্মরণে সেই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করি। সে সময় ঢাকা থেকে ট্রেনে আসা এক কর্মীর কাছ থেকে জানতে পারি, ঢাকায় ছাত্রদের মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছে, যেখানে রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকেই শহিদ হন। তখন রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে শহিদদের স্মৃতি ধরে রাখতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে নির্মাণের পরপরই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সেটি ভেঙে দিয়েছিল।

ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে ভাষাসৈনিক আখুঞ্জি বলেন, তৎকালীন মুসলিম লীগ সরকার বাঙালিদের তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করতো। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। আমরা স্বাধীনতা অর্জনের পরও প্রকৃত স্বাধীনতা পাইনি, বরং পেয়েছি বাকস্বাধীনতা হরণকারী স্বৈরাচারী সরকার। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্ররা নতুন করে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে হবে, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। মাতৃভাষা বাংলাকে গুরুত্ব দিতে হবে, পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে টিকে থাকতে ইংরেজিতেও দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

এসময় রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে নির্মিত সেই প্রথম শহীদ মিনারকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জোর দাবি জানান তিনি। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে রাজশাহীবাসী ও রাজশাহী কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি এক সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে দাবি তোলেন আখুঞ্জি।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, ভাষার জন্য আত্মোৎসর্গ শুধুমাত্র বাঙালি জাতির গর্বিত ঐতিহ্য। একুশ আমাদের জন্য শুধুমাত্র একটি দিন নয়৷ বরং এটি এক অনন্ত চেতনার নাম, যা হৃদয়ে ধারণ করলেই ভাষা শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো হবে। রিপোর্টার্স ইউনিটির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, যা নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান ও চিন্তায় সমৃদ্ধ করবে।
ইউনিটির সভাপতি আবু সাঈদ রনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ইব্রাহিম আলী, আরসিআরইউ’র উপদেষ্টা ড. মো. সৈয়দ আলী আহসান, আজমত আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওয়ালিউর রহমান বাবু।

সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউনিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাকিম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাদিসুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, যুগ্ম সম্পাদক সুজন আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক জুল ইকরাম ফেরদৌস ইবতিদা, অর্থ সম্পাদক ইব্রাহিম মিয়া, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক আল সাকিব, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য ফারজানা ইসলাম মিতু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে দেয়ালিকায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সেরা তিন জনের হাতে অটোগ্রাফযুক্ত পুরষ্কার তুলে দেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS