ঢাকা | ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৫ - ৩:০১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

শিবগঞ্জে পদ্মায় অবৈধ বালু ভরাট হরিলুটের হিড়িক

  • আপডেট: Thursday, February 13, 2025 - 7:00 pm

রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত সরকার:

শিবগঞ্জ (চাঁপাই) প্রতিনিধি: সরকারি নিয়ম তোয়াক্কা না করে ও অনুমোদন ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বোগলাউড়ি-জাইটপাড়া ও মজিবুর চেয়ারম্যানের ঘাট থেকে পানি শূন্য পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে দিনে ও রাতের অন্ধকারে বালু-ভরাট হরিলুটের হিড়িক লেগেছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও প্রশাসন বলছে, পদ্মায় অবৈধ বালু ও ভরাট উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাতের অন্ধকারে বোগলাউড়ি-জাইটপাড়া ও মজিবুর চেয়ারম্যানের ঘাট থেকে পানি শূন্য পদ্মা নদী থেকে প্রায় ২০০টি ট্রাক্টরযোগে বালু-ভরাট হরিলুট করে নিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। অথচ এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কোন কার্যকারী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু-ভরাট হরিলুট করে বিক্রি করে ভূমিদস্যুরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বাঁধের কিনারা থেকে তোলা হচ্ছে ভরাট-বালু।

এ জন্য হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। অবৈধভাবে এসব বালু ও ভরাট উত্তোলন কিছুতেই থামছে না। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত বোগলাউড়ি-জাইটপাড়া ও মজিবুর চেয়ারম্যানের পদ্মা নদীর তীর থেকে ভরাট ও বালু উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের মূলহোতা পাঁকা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বুদ্ধু মন্ডলের ছেলে মন্টু ও চর কানছিড়া গ্রামের তোজাম্মেলের ছেলে আলমগীর।

এই দুই জনের নেতৃত্বে বোগলাউড়ি-জাইটপাড়া পদ্মার ঘাটে জাইটপাড়া গ্রামের আবলের ছেলে মোহবুল, কালুর ছেলে সফিকুল ও বজলুর ছেলে সাইরুন প্রতিটি বালুর ট্রাক্টর থেকে ৪০০ টাকা ও প্রতিটি ভরাটের ট্রাক্টর থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করছেন। এছাড়া মজিবুর চেয়ারম্যানের ঘাট থেকে একই চাঁদা উত্তোলন করছেন লক্ষীপুর গ্রামের বুদ্ধু মন্ডলের ছেলে মন্টু। অবৈধভাবে বালু ও ভরাট উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে নদী রক্ষা বাঁধগুলো।

তবে সিন্ডিকেটের সদস্যরা বলছেন, চর কানছিড়া জাইটপাড়া এলাকার একটি জামে মসজিদের উন্নতিকল্পে ট্রাক্টর থেকে কিছু টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। এদিকে বালু ও ভরাট উত্তোলনের কারণে ইতিমধ্যে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এখন বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা পাঁকা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বুদ্ধু মন্ডলের ছেলে মন্টু বলেন, আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

তবে একটি মসজিদের উন্নয়নের জন্য সামান্য কিছু টাকা উত্তোলনে সাহায্য করছি। দিনের বেলায় অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে রাতে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এখন জানলাম। অবশ্যই এটি বন্ধ করতে উদ্যোগ নিব। চাঁপাইনবাবগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, বালু উত্তোলনের ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। এখন জানলাম। দ্রুত আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বন্ধ করা হবে।