ঢাকা | ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২৫ - ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন

বগুড়ায় ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা: বিশাল মাছে জমজমাট উৎসব

  • আপডেট: Thursday, February 13, 2025 - 8:22 pm

বগুড়া প্রতিনিধি: শত শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে বগুড়ার গাবতলীর ইছামতি নদীর তীরে গত বুধবার বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা। গতকাল বৃহস্পতিবার হয়েছে বউমেলা। মেলাকে ঘিরে আশপাশের গ্রামে বইছে উৎসবের আমেজ।

প্রতিবছর মাঘের শেষ বা ফাগ্লুনের প্রথম বুধবার পোড়াদহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এ মেলা গ্রামীণ সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে বিশাল আকৃতির মাছ ও মিষ্টির জন্য বিখ্যাত এই মেলা।

মাছ ব্যবসায়ী সাধন চন্দ্র জানান, তিনি এবার ২২০ মণ বড় মাছ এনেছেন, যা ভালো দামেও বিক্রি হচ্ছে। মেলায় এবার প্রায় অর্ধশত বাঘাইর এসেছে, যার প্রতিটির ওজন ৪০ কেজির বেশি। এছাড়া ৩৫ কেজির বেশি ওজনের কাতলা ও বোয়ালও এসেছে শতাধিক। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, সকালে মাছের আড়তগুলোতে ব্যাপক ভিড় লেগে থাকে। খুচরা বিক্রেতারা এসব মাছ কিনে নিজ নিজ দোকানে নিয়ে যান এবং দিনভর চলে জমজমাট বেচাকেনা।

মাছের পাশাপাশি বাহারি মিষ্টান্নও এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। এখানে পাওয়া যায় মাছ আকৃতির মিষ্টি, রসগোল্লা, সন্দেশ, জিলাপি, নিমকি, তিলের নাড়ু, খই ও শুকনা মিষ্টি। মিষ্টি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ১৫ কেজি ওজনের ৫টি মিষ্টি তৈরি করে এনেছেন। প্রতিটি মিষ্টির দাম ৭৫০ টাকা। বিশেষত ১০ কেজির মিষ্টি এই মেলার অন্যতম দর্শনীয় উপকরণ। পোড়াদহ মেলাকে কেন্দ্র করে নতুন জামাই-বউকে দাওয়াত দেয়া একটি প্রচলিত রীতি।

স্থানীয় রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, তিনি তার মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত দিয়েছেন এবং তাদের জন্য মাছ ও মিষ্টি কিনেছেন। জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় ৪০০ বছর আগে মেলাস্থলে একটি বিশাল বটগাছ ছিল। এক সময় এখানে এক সন্ন্যাসী আশ্রম গড়ে তোলেন। পরে এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পূণ্যস্থানে পরিণত হয়।

তখন থেকেই প্রতি বছর এখানে বিশাল মেলা বসে আসছে। মেলা উপলক্ষে তিন দিন আগে থেকেই দোকান বসতে শুরু করে। স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মজিদ মণ্ডল জানান, পুরো এলাকা উৎসবের আমেজে ভরে উঠেছে।