ঢাকা | মে ১৬, ২০২৫ - ৯:৪০ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

জনদুর্ভোগ চরমে: সিরাজগঞ্জে কৃষি ও আবাসিক এলাকায় অবৈধ প্রসেস মিল

  • আপডেট: Tuesday, February 11, 2025 - 7:32 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: একদিকে কৃষি জমি, অন্যদিকে জনমানুষের ঘরবসতি-এমনই একটি স্থানে বসানো হয়েছে দুর্গন্ধ ছড়ানো প্রসেস মিল। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের রতুনী গ্রামে মেসার্স পাঁচতারা মার্চারাইজ অ্যান্ড প্রসেস মিল নামে এই কারখানাটির বর্জ্যে একদিকে যেমন ফসলি জমিতে চাষাবাদ ব্যহত হচ্ছে, সেই সাথে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় জনসাধারণ। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে কয়েক বছর ধরে মিলটি পরিচালনা করে আসছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

সরেজমিনে রতুনী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আলমপুর-ভদ্রঘাট আঞ্চলিক সড়কের পাশে ঘনবসতি এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন প্রভাবশালী পার্টনার মিলে পাঁচতারা মার্চারাইজ অ্যান্ড প্রসেস মিলটি স্থাপন করেছেন। মিলের উত্তর-দক্ষিণে রয়েছে বসতবাড়ি, পশ্চিমে পাকা রাস্তা, রাস্তার পাশ দিয়ে অসংখ্য বসতি। মিলের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব কর্নারে রয়েছে শত শত বিঘা কৃষি জমি। মিল থেকে নির্গত বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমিগুলো। চাষাবাদ করতে পারছেন না স্থানীয় কৃষকেরা। কোন কিছু আবাদ করলেই সেটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে বর্জ্যরে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয় লোকজন।

এলাকার টিউবওয়েলগুলোতে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি উঠছে। বাধ্য হয়ে সেই পানি পান করতে হচ্ছে। এতে নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয়রা। রতুনী গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, প্রসেস মিল করার পর থেকে তার এক বিঘা জমি ৮ বছর ধরে পতিত পড়ে আছে। কোনকিছুই আবাদ করতে পারছেন না। একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ৬০ শতাংশ, নুর ইসলামের ৪৮ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না বলে জানান।

এমন অনেক কৃষকেরই চাষাবাদ ব্যহত হচ্ছে বলে তারা বলেন। আছিয়া খাতুন বলেন, আমার ছেলেরা দুই-তিনবার চাষাবাদের চেষ্টা করে। কিন্তু কোনকিছুই চাষ হয় না। ধানের চারা রোপণের কয়েকদিনের মধ্যেই তা পঁচে যায়। এবার ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। সব নষ্ট হয়ে গেছে। মোহাম্মদ আলী নামে স্থানীয় এক কৃষক বলেন, এখানকার পুকুরে এখন আর গোসল করা যায় না। টিউবওয়েলের পানি পান করা যায় না।

এলাকার মানুষ খুব কষ্টে আছে। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, এই প্রসেস মিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দেয়া হলেও কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অফিস থেকে লোকজন আসে সাংবাদিক আসে চলে যায়। মিলের মতো মিল ঠিকই চলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিএনপি নেতা বলেন, ওই প্রসেস মিলটির কারণে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনুমোদনহীন এই মিলটি কিভাবে এখনো চলে সেটা বুঝতে পারছি না।

মেসার্স পাঁচতারা মার্চারাইজ অ্যান্ড প্রসেস মিলের ম্যানেজার বাবুল হোসেনের সাথে কথা বলে মিলের অনুমোদনের কাগজপত্র রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিলে বা আমার কাছে কোন কাগজ নেই। কাগজপত্র মালিকের কাছে আছে। মালিকদের একজন রফিকুল ইসলাম।

তার সাথে মোবাইল ফোনে বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে বলেন। দিকে মিলটির কোন প্রকার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই বলে জানান সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক তুহিন আলম। তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই ওই মিলটিতে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেয়া হবে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS