ঢাকা | ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২৫ - ১২:৫০ পূর্বাহ্ন

পুঠিয়ায় রঙিন ফুলকপি চাষে বাজিমাত, বাণিজ্যিকভাবে বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা

  • আপডেট: Tuesday, February 4, 2025 - 9:32 pm

কীটনাশক কম, জৈব সার বেশি

পুঠিয়া প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের ভরতমারিয়া গ্রামের রঙিন ফুলকপি চাষ করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন নরশেদ আলী (৩৭) নামে স্থানীয় এক কৃষক। বেগুনি রঙের এই ফুলকপি দেখতে খুবই সুন্দর।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, পুঠিয়া উপজেলায় সব রকম কপি মিলে চাষ হয়েছে ৫৫ হেক্টর। এর মধ্যে এক কৃষক ইউটিউব দেখে রঙিন ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করে ১২ কাঠা মাটিতে বেগুনি রঙের ফুলকপি চাষ শুরু পাশাপাশি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে তিনি রঙিন কপির চাষ শুরু করেন।

এতে করে ভালো ফলন ও মূল্য বেশি পাওয়ায় খুবই আনন্দিত কৃষক নরশেদ আলী। তিনি কপিতে কীটনাশক-এর পরিমাণ একেবারে কম মাত্রায় ব্যবহার করেছেন এবং জৈব সারের পরিমাণ দিয়েছেন বেশি। তার এই সাফল্যে অন্যান্য কৃষকরাও কপি চাষে আগ্রহী হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে।

সংশ্লিষ্টদের আশা- নতুন-নতুন সবজি চাষে কৃষকরা এগিয়ে আসলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিদেশে সকল সবজি রপ্তানি করা যাবে।

নরশেদ আলী জানান, এতদিন আমি বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে এসেছি। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী- অল্প কিছু জায়গায় এই রঙিন ফুলকপি চাষ করেছিলাম। ফলনও হয়েছে ভালো। মূল্যও ভালো পাচ্ছি। উৎপাদন খরচও কম। তবে রঙিন কপি হওয়ায় বাজারে সাদা রঙের কপির থেকে আমার বেগুনি ফুলকপির দাম কিছুটা বেশি।

এছাড়াও প্রথম দেখে আমি এই কপি বাজারে বেঁচতে নিয়ে গেল পরবর্তীতে বিভিন্ন পাইকারি বিক্রেতারা আমার জমি থেকে এসে সংগ্রহ করে নিচ্ছে সে জন্য আমার কপি বিক্রি নিয়ে কোন রকম ঝামেলায় পড়তে হয়নি। রঙিন এই কপির পুষ্টিগুণ ও গুণগত মান সাদা কপির চেয়ে বেশি। অনেক দিন আগে থেকেই বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ধরনের রঙিন কপির চাষ করা হয়।

আমাদের উপজেলায় এই প্রথম রঙ্গিন ফুলকপির চাষ হয়েছে। এমন নতুন নতুন সবজি চাষে কৃষকরা এগিয়ে আসলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিদেশে সকল সবজি রপ্তানি করা যাবে। আমাদের এই এলাকায় প্রথমবারের জন্য এমন কপি চাষ হওয়ার জন্য প্রতিদিন অনেক কৃষক আমার জমিতে এসে বেগুনি রঙের কপির ছবি ক্যামেরাবন্দি করছে। তবে আমি অল্প কিছু হলুদ বর্ণের কপির ও চাষ শুরু করেছি, যা পরীক্ষামূলক।

স্থানীয় কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, এই প্রথম নরশেদ আলী জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখেছি। দেখতে খুব সুন্দর। বাজারে দামও বেশ ভালো। আগামি মৌসুমে আমিও এই রঙিন ফুলকপি চাষ করবো। আশা করি কৃষি অফিস আমাকে সহযোগিতা করবে। এছাড়াও আমরা মতো অনেক কৃষক রঙিন কপি চাষে আগ্রহ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার বলেন, আমাদের উপজেলায় এই প্রথম কেউ বেগুনি রঙের কপি চাষ করা হয়েছে। তবে এই কপিতে কীটনাশক-এর পরিমাণ একেবারে কম মাত্রায় ব্যবহার করা হয়। জৈব সারের পরিমাণ বেশি দেয়া হয়েছে। এবং এই কপিতে প্রচুর পরিমাণ আয়রন এবং পুষ্টি গুণে ভরা। সেই জন্য বাজারে এর চাহিদা ভালো। এবং এ ধরনের নতুন নতুন সবজি চাষিদের আমাদের উপ পরিদর্শকরা সার্বক্ষণিক সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার নির্বাহী অফিসার এ,কে,এম, নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, রঙিন এই কপির পুষ্টিগুণ ও গুণগত মান সাদা কপির চেয়ে বেশি। অনেক দিন আগে থেকেই বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ধরনের রঙিন কপির চাষ করা হয়। আমাদের উপজেলায় এই প্রথম রঙ্গিন ফুলকপির চাষ হয়েছে। এমন নতুন নতুন সবজি চাষে কৃষকরা এগিয়ে আসলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিদেশে সকল সবজি রপ্তানি করা যাবে।