ঢাকা | মে ১৬, ২০২৫ - ২:৪০ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো, বেড়েছে অপরাধ

  • আপডেট: Sunday, February 2, 2025 - 8:32 pm

স্টাফ রিপোর্টার: সম্প্রতি রাজশাহী আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের গ্রীল ভেঙে নগদ চার লক্ষাধিক টাকা চুরি করে সংঘবদ্ধ চক্র। সমিতির (ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা) সিসিটিভি ফুটেজে চক্রের সদস্যদের দেখাও যায়। সেই ফুটেজ পুলিশকে সরবরাহ করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে ওই চোর চক্রের কোনো হদিস পায়নি পুলিশ।

শুধু আইনজীবী সমিতি নয়, নগর জুড়ে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো অকেজো হওয়ায় বেড়েছে নানা অপরাধ। পথচারী থেকে যানবাহন চালক অনেকেরই অভিযোগ, নগরীতে বাড়ছে কিশোরগ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, প্রায়ই ঘটছে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়লেও, পুলিশের তৎপরতায় ঘাটতি আছে বলে মনে করছেন নগরবাসী। তবে পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ক্যামেরা পুন:স্থাপন সম্ভব না হলেও বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নজরদারি।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, আগে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকায় অপরাধ দমন অনেকটা সহজ ছিলো। তবে গেল ৫ আগস্টের পর নগরীর বিভিন্ন স্থানের প্রায় পৌনে চার’শ সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুড়িয়ে ফেলা হয় রাজশাহী মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরসহ সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কন্ট্রোলরুম। এসব ক্ষতি কাটিয়ে উঠা বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকটাই অসম্ভব।

রাজশাহী নগরীর সাহেবাজার এলাকায় কথা হয় পথচারী জাহিদুল ইসলামের সাথে, তিনি বলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো নষ্ট থাকায় শহর অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। রাত গভীর হলেই নিরাপত্তার ঘাটতি আরও বাড়ে। ছিনতাই শঙ্কায় এখন অনেকেই প্রাতভ্রমণ বা সন্ধ্যায় হাটতে রাস্তায় বের হতে ভয় পায়। খুব শীঘ্রই সঙ্কট কাটিয়ে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তিনি। রাজশাহীর বিনোদপুর এলাকায় আরেক পথচারী জহুরা ইয়াসমিন বলেন, নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য।

সকাল, বিকাল কিংবা রাতে নারীদের জন্য স্বাভাবিক চলাফেরা কিছুটা কষ্টকর হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল কলেজের সামনেও বখাটেদের আড্ডা বেড়েছে। নগরীর ভদ্রা এলাকার বেসরকারি চাকুরিজীবী ইমরুল ইসলাম পরিস্থিতি অনেকটাই ভীতিকর দাবি করে বলেন, এখন সন্ধ্যা গড়ালেই নিরিবিলি রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। মোটরসাইকেলে করে উঠতি বয়সের কিছু কিশোর ও যুবক ছিনতাই করে বেড়াচ্ছেন। জীবননাশের শঙ্কায় অনেকেই নিরবে এসব সহ্য করে যাচ্ছেন। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনায় পুলিশকে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলাও করা হয়েছে, কিন্তু সহসায় প্রতিকার মিলছে না।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ৯৬.৭২ বর্গ কিলোমিটারের শহর না বাড়লেও, বেড়েছে মেট্রোপলিটন এলাকার পরিধি। ৫ আগস্টের ঘটনায় জননিরাপত্তার জন্য নগরী জুড়ে বসানো সকল সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগতভাবে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাই এখন ভরসা। কোনো ঘটনা ঘটলেই আশপাশে বসানো ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর কিছুটা সঙ্কট সৃষ্টি হলেও এখন তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে। সিসিটিভি নতুনভাবে স্থাপন বা মেরামত করা না গেলেও, বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি। সেই সাথে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকসহ দপ্তরের সংশ্লিষ্টদের সাথে পুলিশের বৈঠক হয়েছে। সেখানেই সিসিটিভি স্থাপনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়।

আরএমপির একটি সূত্র বলছে, সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো অকেজো থাকায় গেল কয়েক মাসে বেড়েছে নানা অপরাধ। রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার ১২টি থানায় মামলাও হয়েছে। পুলিশ বেশকিছু অপরাধীকে আইনের আওতায় আনলেও, অধিকাংশই ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে। তবে রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিভিন্ন ভবনের নিরাপত্তায় এরইমধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ হয়েছে। তবে সাইবার ইউনিটকে ঘুরে দাঁড়াতে কোটি টাকার সরঞ্জাম প্রয়োজন, সেটিও পুলিশ সদর দপ্তরকে জানানো হয়েছে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS