মিজান মাহী, দুর্গাপুর থেকে: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমগাছী সাহারবানু উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৭১ সালে প্রতিষ্টিত এই বিদ্যালয়ের রয়েছে নানা খ্যাতি।

বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে ৭০০ ওপরে। উপজেলার এক মাত্র জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে অসংখ্যক চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ সহ বড় বড় কর্মকর্তা।

আজ রোববার ছিল এই বিদ্যালয়ের বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান। এতে যোগ দিয়েছিলেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন অসংখ্যক চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ সহ বড় বড় চাকুরীজীবি। এছাড়াও ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

গত দুই মাস আগে তৎতালীন উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম এসেছিলেন বিদ্যালয়ের অভিভাক সমাবেশে। তখন উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৪০জন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাকরা। তখন উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম এই ১৪০জন শিক্ষার্থীদের কাছে একটি দাবি করেন। শপথ করতে হবে সব পরীক্ষাথীদের আগামী চার মাসের জন্য। শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি পূরুণে শিক্ষার্থীরাও শপথ নেন হাত তুলে। শিক্ষার্থীরা হাত উচু করে শপথ নিয়ে ছিলেন, বাবা মা ও পরিবারের কারো সাথে কথা বলা ছাড়া মোবাইল ফোন স্পর্শ করবেন না। এবং দিন রাত মিলে প্রত্যাহ গড়ে ৮ ঘন্টা লেখা পড়বেন করনে। শপথ করিয়ে ছিলেন, উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম।

রোববার দুই মাসপর বিদ্যালয়ে বিদায় বরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আসেন মহিদুল ইসলাম। তার বক্তব্যেকালে তিনি মঞ্চের দুই ধারে মেয়ে ও ছেলে পরীক্ষার্থীদের ডেকে নেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা। এ সময় ১৪০জন শিক্ষার্থীদের কাছে প্রথমে জানতে চান তারা অপ্রয়োজনীয় ভাবে মোবাইল ঘাটাঘাটি করেন নি কয় জন পরীক্ষার্থী।

হাত উচু করতে বললেও করেননি একজন পরীক্ষার্থীও। পরে দিন রাত মিলে ৮ ঘন্টা পড়া লেখা করছেনে কয় জন । হাত উচু করতে বললেও কেউ হাত তুলেন নি। তখন সকর পরীক্ষার্থীদের নিবর দেখা গেছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েন এই কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম।

তখন মহিদুল ইসলাম বলেন, এই বিদ্যালয়ে কত স¦নাম। জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। তোমরা চার মাসের জন্য আমার কাছে পথ করেছিলে। অথচ ১৪০ পরীক্ষার্থীর কেউ একজনও এ শপথ রক্ষা করতে পারো নি। তাহলে তোমরা ভাল রেজাল্ট করবে কীভাবে। আমি ভেবেছিলাম। তোমরা আমরা শপথ রক্ষা করবে।

মহিদুল ইসলাম ১৪০ জন পরীক্ষার্থীর উদ্দেশ্য বলেন, তোমরা আমাদের হতাশ করেছো। এখনও যতদূর সম্ভব মোবাইল ফোন থেকে দুরে থাকতে হবে। ব্যাপকহারে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে। কেন তোমরা মোবাইল ফোন থেকে দুরে থাকতে পারছো না? জানতে চাইলে শিক্ষার্থীদের নিরব দেখা গেছে। পরে মহিদুল ইসলাম এখনও এসএসসি পরীক্ষার দুই মাস সময় রয়েছে বলে আবারও পড়াশোনায় মনোযোগী হতে যতদূর সম্ভব মোবাইল ফোন দুরে রাখতে ও দিন রাত মিলে প্রায় ৮ ঘন্টা পড়াশোনায় করতে শিক্ষার্থীদের কাছে হাত তুলে ওয়াদা করে নেন।

আমগাছী সাহারবানু উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আশরাফুল কবীর খসরুর সভাপতিত্বে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ শিক্ষার্থী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সেলিনা শিরিন, রাজশাহী জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ চাকুরীজীবিসহ অতিথি বৃন্দ।