মেঘলার কি ভর্তি হতে পারবে মেডিকেলে
কলিট তালুকদার, পাবনা থেকে: ভর্তির তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে, চিন্তার ছাপ পড়ছে মেডিকেলে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থী মেঘলার বাবা দিনমজুর আর মা কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। দরিদ্র পিতামাতার একমাত্র সন্তান মেঘলা খাতুন (১৯)।
দারিদ্রতা আর অভাব কোনটাই থামাতে পারেনি মেঘলাকে। পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের মৌগ্রাম মহল্লার দিনমজুর কৃষক হাসমত মির্জা ও গৃহকর্মী চায়না খাতুনের একমাত্র মেয়ে মেঘলা খাতুন।
এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। শত আনন্দেও মাঝেও হাসি নেই মেঘলা ও তার পরিকবারের সদস্য মুখে। একটাই চিন্তা কিভাবে জোগার হবে ভর্তির এত টাকা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে মেঘলা ও তার পরিবারের চোখে মুখে চিন্তার ছাপ যেন বাড়ছে।
চরম দারিদ্রতা অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠা মেঘলার। ভালো জামাকাপড় দূরের কথা দিন মজুর বাবা-মা ঠিকমত দু বেলা দু’মুঠো খাওয়ার যোগান দিতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। মাত্র ৬টি টিনের একচালা একটি জীর্ণ ঘর।
ছোট ওই ঘরের একপাশে বাবা মা অন্যপাশে থাকে মেঘলা। নেই কোনো পড়ার চেয়ার টেবিল। অন্যের বই খাতা ও শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে মেঘলা একের পর এক মেধার পরিচয় দিয়েছে।
আলাপকালে মেঘলা জানায়, সে পড়ার বাইরে কখনই কিছু ভাবতো না। সব সময় বই নিয়েই বসে থাকতো। ছোটবেলা থেকে তার ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হবে। সে ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে গরীব অসহায়দের বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কিন্তু তার সেই আশা কি পূরর্ণ হবে। মেঘলার বাবা মা বলেন, খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে তারা মেয়েকে পড়িয়েছেন।
তাদের দারিদ্রতা ও মেঘলার মেধা দেখে শিক্ষকেরা তাকে বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়াতেন। কখনই তারা মেয়ের সখ আবদার পূরণ করতে পারেননি। অন্যের বাড়িতে দিন মজুর খেটে কোন মতে সংসার চালিয়ে মেয়েকে পড়িয়েছে।
মেয়ে কখনই তাদের উপর কোন কিছুর জন্য চাপ দিত না। ভর্তির এত টাকা কই পাবো এই চিন্তায় তো ঘুম আসছে না। সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন মেঘলা ও তার বাবা মা।