রাবিতে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি না হওয়ায় বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনায় তদন্তের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ স্মৃতিফলকের সামনে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট’র ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানানো হয়। এর আগে সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডসহ বিভিন্ন একাডেমিক ভবনসংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এসে মিছিলটি শেষ হয়।
পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আন্দোলনকারীরা ‘হলে হলে কোরআন পোড়ে, প্রভোস্টরা কী করে?’ ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করো, করতে হবে’, ‘ধর্মগ্রন্থ পোড়ায় যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তারা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রগণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে কোরআন পোড়ানোর মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ দিনের সময় নেয়। কিন্তু সাতদিন পার হলেও তদন্ত কমিটির কোনো কার্যকর পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। কিন্তু হঠাৎ একটি কর্মসূচিতে উপাচার্য বলছে তারা নাকি এই ঘটনা উদঘাটন করতে পেরেছে।
যদি আপনারা ঘটনা উদঘাটন করেই থাকেন, তাহলে কেন প্রকাশ্যে নিয়ে আসছেন না? আপনারা এই ঘোষণা দিয়ে তো অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। সত্যি তারা যদি জড়িতদের শনাক্ত করে থাকে, তাহলে অতিদ্রুত তাদেরকে সামনে এনে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অতিদ্রুত এই ঘটনার সুরাহা না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীন ত্রিপুরা বলেন, ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর ঘটনা প্রতিটা ধর্মের ওপরেই আঘাত হানে। কিন্তু যারা এই আঘাত হেনেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার কথা ছিল। কিন্তু এখনও শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। তাদের অনতিবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনা হোক। ঘটনার ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার কথা থাকলেও এখনও জমা হয়নি। অতিদ্রুত জমা না হলে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো।
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন। এসময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭ টি হলে পবিত্র কোরআনের পোড়া ও ছেঁড়া কপি পাওয়া যায়। ঘটনার তদন্তে ওইদিনই ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু প্রতিবেদন জমার নির্ধারিত সময় পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়নি।