রাবিতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, প্রতিবাদে স্থানীয়দের বিক্ষোভ মহাসড়ক অবরোধ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিমুল ইসলাম সিহাব নামে রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে বিনোদপুর গেইটের সামনে বিক্ষোভ করছে স্থানীয়রা।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল নিয়ে বিনোদপুর গেট অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এসময় দুই দিকের গাড়ি আটকে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
এসময় তারা ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস; তুমি কে আমি কে, বহিরাগত, বহিরাগত; শিমুল ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে; জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো; প্রক্টরের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে; একশান টু একশান ডাইরেক্ট একশান; রাজশাহী কলেজের একশান, ডাইরেক্ট একশান ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডী এলাকার বাসিন্দা নিলয় নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা বহিরাগত বলে ক্যাম্পাসে ঢুকলে মেরে ফেলবে কেন? এছাড়াও আমাদের বিভিন্ন সময় টোকাই, বহিরাগত বলে অপমান করা হয়। আমাদের এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়, আমরা কেন ঢুকবো না? আমরা শিমুল হত্যার বিচার চাই। দাবি না মানালে আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।
ওমর নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না তারা ক্যাম্পাসে ঢুকলে আমাদের বিভিন্নভাবে গালিগালাজ করা হয়। আমরা আজকের ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব। সেই সাথে এই ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই দাবি জানাই।
বিক্ষোভের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, যেহেতু একটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে তারা বিক্ষোভ করবে, এটা স্বাভাবিক। আমরা স্থানীয়দের সাথে কথা বলছি। আজ ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা হয়তো পদক্ষেপ নিবে।
এদিকে কলেজ শিক্ষার্থীর ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর ঘটনায় অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। তিন সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিনকে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাজশাহী কলেজের শিমুল ইসলাম শিহাব নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু নাকি মারধরে মারা গেছেন সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ বলছে, নিহতের পরিবার মৌখিকভাবে দাবি করছে তাঁকে মারধর করে মারা হয়েছে। তবে নিহতের লাশে কোনো মারধর, ছেড়া-ফাঁটা কিংবা ক্ষতের দাগ পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ। তাই সুনির্দিষ্টভাবে এখনো কিছু বলতে পারছেন না তারা। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে রামেকের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, তাঁকে ফিজিক্যাল এসালড ব্রডডেথ হিসেবে পেয়েছেন। শরীরের বাইরের অংশে মেজর কোনো ক্ষতের দাগ পাওয়া যায়নি। আর এই মৃত্যুর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।