ঢাকা | জানুয়ারী ২৫, ২০২৫ - ৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রান্নার পোড়া তেল থেকে হচ্ছে বায়োডিজেল, রাজশাহীতে গড়ে সংগ্রহ হাজার লিটার

  • আপডেট: Friday, January 24, 2025 - 9:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাস্তার ধার থেকে শুরু করে নামি-দামি রেস্তোরাঁয় মুখেরোচক খাবার তৈরিতে ব্যবহার হয় তেল। অনেক ফুটপাত, এমনকি নামি রেস্তোরাঁয় আগের দিনের ব্যবহার করা তেল আবারও ব্যবহার হয়ে থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এমন পরিস্থিতি থেকে ভোক্তাদের নিরাপদ রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। দিনের পোড়ানো তেল সংগ্রহ করে সেগুলো পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। সেই তেল থেকে তৈরি হচ্ছে বায়োডিজেল, গ্লিসারিন।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারের এটুআই প্রকল্পের আওতায় রাজশাহীর রেস্তোরাঁগুলো থেকে দিনের পোড়ানো তেল সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে ৯০৫.৪ লিটার, নভেম্বরে ৯৫০.৩ লিটার, অক্টোবর মাসে ৯৯০.২ লিটার ও সেপ্টেম্বর মাসে ১৫০১.১ লিটার তেল সংগ্রহ করা হয়েছে। ৫৫ টাকা লিটার দরে এসব তেল সংগ্রহ করা হয়।

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, মুয়েনজার নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর রেস্তোরাঁগুলো থেকে রান্নার পোড়ানো তেল সংগ্রহ করে। সেই তেল রিসাইকেলের মাধ্যমে তারা বায়োডিজেল তৈরি করছে। এছাড়া গ্লিসারিন তৈরি করে।

তিনি আরও জানান, রেস্তোরাঁগুলোতে সকাল থেকে যে তেলে ভাজা-পোড়ার কাজ করা হয়, দিন শেষে সেগুলো একটি জারে জমা রাখেন। সেই জারও মুয়েনজার সরবরাহ করেছে। সেখান থেকে সপ্তাহ শেষে তারা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। নভেম্বর মাসে পরীক্ষা চালায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যপণ্য পরীক্ষার পাশাপাশি তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল জানানোর জন্য একটি ‘ভ্রাম্যমাণ নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার’ চালু করা হয়। স্বেচ্ছায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নগরী ও জেলার বেশ কিছু স্থানে পরীক্ষা চালায়।

এরমধ্যে নভেম্বর মাসে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ রাজশাহী জেলার গোদগাড়ী ও পুঠিয়া উপজেলার ১৬টি হোটেল-রেস্তোরাঁর তেল পরীক্ষা করে। এছাড়া রাজশাহী মহানগরীর ২২ রেস্তোরাঁ তেল পরীক্ষা করা হয়। ওলিও টেস্ট কিটের মাধ্যমে চলে এসব পরীক্ষা।

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা পরীক্ষাগারটি চালু করেছি। এখানে সব মিলিয়ে ৩৮ ধরেনের টেস্ট হয়। তবে বর্তমানে মোট ২৫টি টেস্ট হচ্ছে। বাকিগুলো টেস্ট কিট এলেই শুরু হবে। এরই মধ্যে আমরা তেল, দুধ, বেকিং সোডাসহ বেশ কিছু খাবারের পরীক্ষা করেছি।

এরমধ্যে তেলে সবচেয়ে ক্ষতিকর বস্তু পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে টেস্ট করার পর তাৎক্ষণিকভাবে সেটি ধ্বংস করে দিচ্ছি। তবে জরিমানা করছি না। সচেতন করছি মানুষকে যাতে এগুলো না কিনে। তবে জরিমানার প্রয়োগ না ঘটানো গেলে এটি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব সহজ হবে না।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান খান বাদশা গণমাধ্যমকে বলেন, পোড়া তেল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পোড়া তেল খেলে পাকস্থলি, লিভারের রোগ হতে পারে। একাধিকবার ব্যবহার করা তেল পরেরদিন যাতে ব্যবহার না হয়, এমন উদ্যোগ নিরাপদ খাদ্যকে কিছুটা হলেও নিশ্চিত করবে। রেস্তোরাঁগুলো যাতে বেশি পোড়ানো তেল ব্যবহার না করে, সেটি আরও বেশি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।