ঢাকা | জানুয়ারী ২১, ২০২৫ - ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

আদা চাষে সফলতার স্বপ্ন ঝালমুড়ি বিক্রেতা বাবলু মিয়ার

  • আপডেট: Monday, January 20, 2025 - 6:00 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: অনেকটা নিজের প্রয়োজনে আর শখের বশেই বস্তায় আদাচাষ শুরু করে এখন সফলতার স্বপ্ন দেখছেন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ঝালমুড়ি বিক্রেতা বাবলু মিয়া। ঝালমুড়ি বিক্রিতে প্রতিদিন আদার প্রয়োজন হওয়ায় বাবলু মিয়াকে দোকান থেকে আদা কিনতে হয়।

এবার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজের বাড়ির পতিত জমিতে তিনি আদার চাষ করবেন। এরপর ইউটিউব দেখে আর উপজেলা কৃষি অফিসারদের পরামর্শে শুরু করেন আদার চাষ। ত্রিশ শতক জমিতে পাঁচ হাজার বস্তায় তিনি আদার চাষ করেছেন। বাবলু মিয়া আদা চাষের পাশাপাশি লাউ, কুমড়া ও করলার চাষ করেছেন।

দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ, শারীরিক সুস্থতা এবং ওজন হ্র্রাসে মসলা জাতীয় ফসলের গুরুত্ব থাকায় উপজেলা কৃষি বিভাগ আদা চাষের প্রকল্প হাতে নিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। দিচ্ছেন নানা পরামর্শ ও সহায়তা।

সরেজমিন বাবলু মিয়ার আদার জমিতে গিয়ে দেখা গেছে, সাথী ফসল হিসেবে লাগানো পুরনো লাউ কুমড়ার গাছগুলো তিনি কেটে সরিয়ে ফেলছেন। তিনি জানান, অনেকদিন যাবৎ বাড়ির সামনে আমাদের জমিটি পতিত হিসেবে পড়েছিলো। সেখানে এবার আদার চাষ করেছেন। সেই সাথে গত আদার জমির ফাঁকে লাগানো লাউ-কুমড়া এবং করলা বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার টাকার পেয়েছেন। এখন আদা উঠানোর অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।

তবে দুইমাস পূর্বে বাজারে আদার দাম বেশি হওয়ায় তিনি বেশকিছু বস্তা থেকে আদার সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেছেন। এসময় প্রতি বস্তা থেকে প্রায় এক থেকে দেড় কেজি করে আদা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। গত বছরের এপ্রিলের শেষের দিকে তিনি এই চাষ শুরু করেন। প্রতি বস্তায় ব্যবহার করেছেন মাটি, খৈল ও গোবর সার।

শ্রমিকের মজুরি, বীজ, বস্তা ক্রয় সবকিছু মিলে প্রতি বস্তায় তার ৫০ থেকে ৫২ টাকা করে ৫ হাজার বস্তায় মোট ২ লাখ ৫০ হাজার খরচ হয়েছে। প্রতি বস্তা থেকে এক থেকে দুই কেজি করে আদার ফলন তিনি পাবেন বলে আশা করছেন। আদার চলতি যে বাজার এখনও আছে তাতে করে তিনি প্রতি বস্তায় খরচ বাদে ৫০ থেকে ৫২ টাকা করে বাড়তি টাকা পাবেন। এতে করে প্রায় আড়াই থেকে পৌনে ৩ লাখ টাকা তার লাভ হবে।

কাজিপুরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বস্তায় আদা চাষ করলে বাড়তি ফসলি জমি ও শ্রমের প্রয়োজন হয় না। বস্তার মাটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। মাটির সাথে গোবর সার, খৈল, ছাইসহ রাসায়নিক সার মিশিয়ে কৃষকরা পতিত জমি কাজে লাগিয়ে বস্তায় আদা চাষ করছেন। সার-গোবর ছাড়া একটু খেয়াল রাখলে ও মাঝে মাঝে পানি দিলেই আদা গাছ টিকে যাবে। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, বস্তায় আদার চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

এ পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে কৃষক সহজেই লাভবান হওয়ার সুযোগ পান। কারণ বাড়ির আশপাশে পতিত জমি, আম বাগান, লিচু, পেয়ারা বাগান ও বাসার ছাদে সহজেই আদার চাষ করা যায়। বাবলু মিয়ার এই উদ্যোগ এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।