স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে চাঁপাইয়ের সীমান্ত পরিস্থিতি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যুরো: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কিরণগঞ্জ-চৌকা সীমান্তে ফসল ও গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে।
গত শনিবার সন্ধ্যার আগেই দুই দেশের নাগরিকরাই ঘরে ফিরেছেন। চলমান উত্তেজনার মধ্যে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত হতে থাকে। রোববার দিনভর সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ও আতঙ্ক থাকলেও কোন উস্কানীমূলক বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে সীমান্তের দুই পারেই বিজিবি ও বিএসফএফ সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে, সীমান্তে বার-বার এ ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির জন্য সীমান্তবাসী ভারতীয় আগ্রাসনকেই দুষছেন। বিশ্বনাথপুর বাখের আলী গ্রামের মোরসালীন বলেন, চৌকা সীমান্তের ১২০০ গজ ফাঁকা জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করার লক্ষ্যে বিএসএফ এই অহেতুক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে চলেছেন।
তবে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিজিবি এবং স্থানীয় জনগণ ভারতের এই আগ্রাসনকে যৌথভাবে রুখে দেয়। বিজিবি এবং স্থানীয় জনগনের দেশপ্রেম এবং বাংলাদেশের ভূখন্ডের এক ইঞ্চি জমিও যাতে হাতছাড়া না হয়, সেই ঐক্যবদ্ধ আরো অনুপ্রাণিত করেছে এবং বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিকদের সাম্প্রতিক আগ্রাসন রুখে দিয়েছে।
সীমান্তবর্তী বাখের গ্রামের মঈন আলী বলেন, মূলত- চৌকা সীমান্তের পিলার ১৭৭/২ এর কাছে ৬-৭ মাস আগে বিএসএফ ভারতের পাতানী নদীর ওপারে কাঁচারাস্তা নির্মাণ করে। তখন থেকে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ চৌকা সীমান্তের ১২০০ গজ ফাঁকা জায়গায় অর্থাৎ নো-মান্সল্যান্ডের ১০০ গজ এগিয়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করার চেষ্টা শুরু করে এবং জানুয়ারীর প্রথমার্ধে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মানের কাজ শুরু করলে বিজিবি এবং জনগনের প্রতিরোধে তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
কাটাতাঁর কাটার বেড়া নির্মাণে মরিয়া হয়ে ওঠাই অহেতুক নানা অজুহাতে সীমান্তে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করে চলেছে বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকরা।
রোববার সকালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের সীমান্তবর্তী এলাকায় কৃষকরা অন্যদিনের মতো স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে দেখা গেছে। তবে শনিবার ভারতীয়দের হামলায় পাঁচ জন বাংলাদেশি আহত, ৪০ আমগাছ ও অর্ধশত বরই গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় বাংলাদেশি সাধারণ জনগণের মাঝে কিছু আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিনাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, দৈনন্দিন সীমান্তের টহল কার্যক্রম সীমান্ত এলাকায় চলমান রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে। ৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
তিনি শূন্যরেখায় না যেতে এবং পদদলিত করে ফসল নষ্ট না করতে জনসাধারণকে সচেতনতার লক্ষ্যে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করছেন। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে বিএসএফ’র পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।