‘ঘুষ’ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল, নাটোরের সেই এসআই প্রত্যাহার

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর সদর থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে আসা এক সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার ঘটনায় মো. আমিনুল ইসলাম নামে এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় তিনি জানান, অভিযুক্ত এসআই আমিনুলকে প্রাথমিকভাবে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে নাটোর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এটি পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত এসআইয়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি ঘুষ নেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্রই তুমুল আলোচনার ঝড় ওঠে। পাশাপাশি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
১ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য কাগজপত্র দিতে আসা এক সেবাপ্রার্থী সদর থানার এসআই আমিনুল ইসলামের সঙ্গে হাত মেলানোর ছলে ঘুষ দেন। পরে আমিনুল তা ড্রয়ারে রেখে দেন।
ভিডিওটি ধারণকারী মামুন হোসেন নামে অপর এক ভুক্তভোগী জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তিনি তার পরিচিত মোবারক হোসেনের হয়ে সম্প্রতি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে থানায় যান। এ সময় সদর থানার ভেতরেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আমিনুল তার কাছে ঘুষ দাবি করেন।
এ সময় তিনি ঘুষ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তবে সেসময় অন্য এক আবেদনকারীর কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার একটি ভিডিও ধারণ করে রাখেন তিনি। পরে পুনরায় তার কাছে ঘুষ দাবি করলে প্রতিবাদ করে থানা থেকে বেরিয়ে যান তিনি। পরে আবেদনকারী মোবারককে বার বার ফোন করে ঘুষ দাবি করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, যারাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করেন তাদের কাছ থেকে কৌশলে সদর থানা পুলিশের অনেক কর্মকর্তা টাকা আদায় করে থাকেন। এই সময়ে এসেও যদি তারা এভাবে ঘুষ নেন তাহলে তো আর বলার কিছু থাকল না। তবে এ ব্যাপারে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া অভিযুক্ত এসআই আমিনুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তিনি মোবাইল কলও রিসিভ করেননি।
নাটোর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান জানান, ভিডিওটি তাদের নজরে আসার পর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। ইতিমধ্যে তাকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে নাটোর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নেয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গেও তার কথা হয়েছে।