ঢাকা | জানুয়ারী ১৬, ২০২৫ - ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

মান্দায় অবৈধভাবে ২০ বছর ধরে চাকরি করার অভিযোগ

  • আপডেট: Wednesday, January 15, 2025 - 7:10 pm

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় অবৈধভাবে গত ২০ ধরে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে ফিরোজ আহম্মদ খাঁন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ তোলা হয়েছে- কখনো অফিস সহকারি, কখনো সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত দেখিয়ে সরকারি বেতন ভাতার টাকা উত্তোলন করে আসছেন তিনি।

অভিযুক্ত ফিরোজ আহম্মদ খাঁন বর্তমানে উপজেলার গোবিন্দপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে কর্মরত আছেন। তিনি গোবিন্দপুর গ্রামের মেছের আলী খাঁনের ছেলে।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত অবস্থায় অন্য পদে নিয়োগ নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। পরিবর্তীত পদে নিয়োগ নেয়ার আগেই কর্মরত পদে থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

এক্ষেত্রে অফিস সহকারী পদ থেকে পদত্যাগ না করেই ফিরোজ খাঁনের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নেয়া বিধিসম্মত হয়নি। তথ্য গোপন করে সরকারি বেতনভাতা উত্তোলনও বড় ধরনের অপরাধ।

অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, ফিরোজ আহম্মদ খাঁন ১৯৯৬ সালের ২ নভেম্বর গোবিন্দপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সহকারি পদে যোগদান করেন। এ পদে চাকরিকালিন ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে একই প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নেন।

সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের সময় ফিরোজ খাঁন আগের অফিস সহকারী পদে পদত্যাগ করেননি। এ কারণে অফিস সহকারী পদে তার সরকারী বেতনভাতা নিয়মিত ছিল।

বিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, ফিরোজ খাঁনকে এই দুই পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন তৎকালিন প্রধান শিক্ষক প্রয়াত আফাজ উদ্দিন মণ্ডল। প্রতিদিনের হাজিরা খাতায় তিনি সহকারী শিক্ষক পদে স্বাক্ষর করেন। কিন্ত এ পদে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় ২০১৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অফিস সহকারী পদের বেতনভাতা উত্তোলন করে ভোগ করেন।

মান্থলি পে-অর্ডার (এমপিওসীট) পর্যালোচনা করে দেখা যায়- ২০১৩ সালের মে মাসে সহকারী শিক্ষক পদে ফিরোজ খাঁন এমপিওভুক্ত হন। অফিস সহকারীর পদ বহাল থাকায় মে মাসে তার নামে দুই পদেই সরকারী বেতনভাতা ইস্যু হয়।

কিন্তু তিনি সহকারী শিক্ষক পদের বেতনভাতা উত্তোলন করেন। জুন মাসেও একইভাবে সহকারী শিক্ষকের বেতনভাতা উত্তোলন করেছেন ফিরোজ খাঁন। কিন্তু একই বছরের জুলাই মাসে নিয়োগ জটিলতার কারণে সারা দেশে ২৭৭ জন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করে দেয়া হয়। এর মধ্যে ফিরোজ আহম্মদ খাঁনও ছিলেন। সহকারী শিক্ষকের এমপিও স্থগিত হলে পুনরায় নিয়োগ না নিয়ে অফিস সহকারী পদের বেতনভাতা নিয়মিতভাবে উত্তোলন করছেন।

বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছুরত আলী প্রামাণিক বলেন, ফিরোজ খাঁন অফিস সহকারী পদে পদত্যাগ না করেই সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নেন। এ কারণে তার নিয়োগটি বৈধ ছিল না। সেসময় তার আপন বড়ভাই আব্দুল মালেক খাঁন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে উচ্চপদে চাকরি করার সুবাদে তিনি সহকারি শিক্ষক পদে এমপিওভুক্ত হন।

মাত্র দুই মাস তিনি এ পদে বেতনভাতা ভোগ করেন। এভাবে অবৈধ নিয়োগে ২০ বছর ধরে সরকারি বেতনভাতার টাকা আত্মসাত করছেন তিনি।

এ বিষয়ে ফিরোজ আহম্মদ খাঁন বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি আমাকে যেভাবে নিয়োগ দিয়েছে; আমি সেভাবেই চাকরিসহ বেতনভাতা উত্তোলন করছি। এর বেশি আর কিছুই বলতে পারছি না।

জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে একই প্রতিষ্ঠানে এক পদে পদত্যাগ না করে অন্য পদে নিয়োগ নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফিরোজ খাঁনের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে তা বিধিসম্মত হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।