পাবনার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চলছে পেঁয়াজ আবাদ
পেঁয়াজ আমদানি না করার অনুরোধ
কলিট তালুকদার, পাবনা থেকে: সারাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনকারি জেলার মধ্য অন্যতম জেলা হচ্ছে পাবনা জেলা। বর্তমানে এই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলছে পেঁয়াজ আবাদের ধুম। পেঁয়াজের চারা তোলা, লাগানো ও সেচ দিতে প্রতি মুহূর্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। ভোর থেকেই শ্রমিকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে পাবনার পেঁয়াজ ভাণ্ডার খ্যাত সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা।
কেউ ব্যস্ত পেঁয়াজের চারা তুলতে, কেউ জমিতে চারা রোপণে, আবার কেউ সেচ কাজে। বীজ, সারসহ চাষে ব্যবহৃত সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। শুরুতেই চারা বিক্রিতে লোকসান গুণতে হচ্ছে চাষিদের। এতে পেঁয়াজের দাম নিয়ে এখন থেকেই চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। তবে বাম্পার ফলন হবে এবং ভালো দাম পাওয়া যাবে; এমন আশায় রোপণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কৃষি বিভাগের মতে দেশে পেঁয়াজের যে চাহিদা, তার বড় একটি অংশের জোগান আসে উত্তরের জেলা পাবনা থেকে। এ জেলার চাষিরা দুটি পদ্ধতিতে পেঁয়াজের আবাদ করেন। এর একটি কন্দ (মূলকাটা বা মুড়িকাটা) অন্যটি চারা (হালি) পদ্ধতি। হালি পদ্ধতিতে রোপন শুরু হয় ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে। চারা পদ্ধতিতে চাষ করা পেঁয়াজ রোপণের তিন মাস পরে তোলা হবে পরিপক্ক পেঁয়াজ। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলায়।
এছাড়াও কম বেশি প্রায় সব উপজেলাতেই পেঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। এক সাথে সবাই পেঁয়াজ রোপণ শুরু করায় দেখা দেয় শ্রমিক সঙ্কট। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে লেখাপড়ার পাশাপাশি পেঁয়াজ রোপণে সহায়তা করেন অনেক শিক্ষার্থীরাও। চারা বিক্রি থেকেই দাম না পাওয়ায় পেঁয়াজের দাম নিয়ে এখন থেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষক। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ার জন্য কৃষকেরা পাশ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানিকে দায়ী করছেন।
সরকার এ মৌসুমেও পেঁয়াজ আমদানি করে কি না তা নিয়ে কৃষকেরা শঙ্কিত! সেটি করা হলে চরম ক্ষতির শিকার হবেন বলে জানিয়েছেন তারা। এই জন্য তারা এ বছর ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পেঁয়াজ আমদানি নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি পাবনার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. জামাল উদ্দীন বলেন, মৌসুমে কিছুটা সময় পেঁয়াজ আমদানি কমানো এবং নতুন করে শুল্ক আরোপ করে পেঁয়াজ আমদানীতে নিরুৎসাহিত করার জন্য তারা এখন থেকেই সরকারকে সুপারিশ করছেন।
তিনি আশা করেন; কৃষকদের লাভের কথা চিন্তা করে সরকার পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখবে। এ বছর পাবনায় ৪৪ হাজার ২২১ হাজার হেক্টর জমিতে চারা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৬ মেট্রিক টন।