অবশেষে সারদায় পুলিশ কনস্টেবলদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত
চারঘাট প্রতিনিধি: রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ১৬৭তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকালে পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান ভূঞা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী টিআরসিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
সমাপনী কুচকাওয়াজে ৩৩৪ জন টিআরসি অংশ নেন।
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলদের মধ্যে সাজ্জাদুল ইসলাম বেস্ট টিআরসি হিসেবে নির্বাচিত হন। এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে বেস্ট একাডেমিক হিসেবে সুমন আলী, বেস্ট ইন ফিল্ড অ্যাকটিভিটিজ ও বেস্ট শুটার হিসেবে পৌরব চন্দ্র রায় নির্বাচিত হন।
অনুষ্ঠানে কোর্স ডিরেক্টর পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন ইমনসহ অন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ২৪ জুন ৩৪৪ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলের ৬ মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত ২০ ডিসেম্বর। আর ১৯ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর অনিবার্য কারণবশত এই কুচকাওয়াজ স্থগিত করে দেয়া হয়। অবশেষে গতকাল প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হলো।
এদিকে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর একাডেমিতে ৮২৩ জন ক্যাডেট উপপরিদর্শকের (এসআই) এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। গেল বছরের ৪ নভেম্বর তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখনো প্রশিক্ষণ শেষ হয়নি। গত ২৬ নভেম্বর সমাপনী কুচকাওয়াজের জন্য দিন ঠিক করা হলেও পরে স্থগিত করে দেয়া হয়।
এরই মধ্যে সম্প্রতি ৪ দফায় মোট ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সবশেষ ২৯ ডিসেম্বর আটজনের কাছে ব্যাখ্যা তলবের পর তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের বিরুদ্ধে ‘নাশতা না খেয়ে বিশৃঙ্খলা এবং প্রশিক্ষণ চলাকালে হইচই’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ব্যাচে এখন ৫০২ জন এসআই টিকে আছেন।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর ৪০তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ৭১ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। গেল বছরের ২০ অক্টোবর প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এই প্রশিক্ষণ এখনো শেষ হয়নি। ১৯ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল।
কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বর ‘অনিবার্য কারণবশত’ এই কুচকাওয়াজ স্থগিত করে দেয়া হয়। গত ২০ অক্টোবর এএসপিদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের রাতে হঠাৎ করে এই পাসিং আউট অনুষ্ঠান স্থগিত করে দেয়া হয়। এরপর ২৪ নভেম্বর আবারও সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করা হলেও ১৮ নভেম্বর স্থগিত করা হয়। এরপর ১৫ ডিসেম্বর ব্যাচের ৭১ এএসপির মধ্যে ২৫ জনের কাছে কৈফিয়ত তলবের চিঠি দেয়া হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে ‘প্যারেডে দৌড় না দিয়ে এলোমেলোভাবে হাঁটা’র অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের জবাব দিতে তিন দিন সময় দেয়া হয়। এএসপিরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই লিখিত জবাব দেন।
তাদের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি। একাডেমিতে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে পুলিশ সদস্যরা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত হন এবং মাঠপর্যায়ে কাজের সুযোগ পান। এরও এক বছর পর তাদের চাকরি স্থায়ী হয়।