ঢাকা | অক্টোবর ২০, ২০২৪ - ১০:২৮ অপরাহ্ন

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে খেতুরীধাম মহোৎসব

  • আপডেট: Sunday, October 20, 2024 - 10:22 pm

স্টাফ রিপোর্টার: সোমবার (২১ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে বৈষ্ণব ধর্মের মহাপুরুষ নরোত্তম দাস ঠাকুরের তিরোভাব তিথি মহোৎসব। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুরীধামে প্রতিবছর সারা দেশ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ নরোত্তম ভক্ত এ উৎসবে যোগ দেন। নরোত্তম ঠাকুরের তিরোভাব তিথি উপলক্ষে এবার ৪৯০তম মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রতিবছর লক্ষ্মী পূর্ণিমার পাঁচদিন পর পঞ্চমী তিথিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সারা দুনিয়ায় বৈষব ধর্মের অনুসারীদের পাঁচটি ধাম রয়েছে। এরমধ্যে চারটিই ভারতবর্ষে। বাংলাদেশের একমাত্র ধাম এই খেতুরে। তাই বাংলাদেশের সনাতন বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারীদের কাছে এর গুরুত্ব অনেক। দেশের আর কোথাও বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারীদের এত বড় জমায়েত হয় না।

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এ বছরের তিন দিনের এই মহোৎসব। আজ সন্ধ্যায় শুভ অধিবাসের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) অরুনোদয় থেকে অষ্টপ্রহরব্যাপী চলবে নাম সংকীর্ত্তন। বুধবার (২৩ অক্টোবর) ভোগ মহোৎসব, দধিমঙ্গল ও মহান্ত বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হবে অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ইতিমধ্যে নরোত্তম ভক্তরা ধামে আসতে শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে আয়োজকদের পক্ষ থেকেও চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্ট বোর্ড পরিচালনা কমিটির সম্পাদক শ্যামাপদ সান্যাল গণমাধ্যমকে বলেন, খেতুরীধামের উৎসব নিয়ে এ এলাকার মানুষ যথেষ্ট আন্তরিক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। কখনও এখানে বিশৃঙ্খলা হয়নি। শুধু প্রশাসন দিয়ে সবকিছু হয় না। স্থানীয়দেরও সহযোগিতা লাগে। এটা এলাকার মানুষ সব সময় দেন। ভক্তদের থাকার জন্য অনেকে নিজের ঘর ছেড়ে দেন। এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে! এখানে যে মেলা বসে সেটা শুধু সনাতন বা বৈষ্ণব ধর্মের মানুষের নয়, সব ধর্মের মানুষই আসে।

তিনি জানান, গতবছর অবরোধের কারণে উৎসবে ভক্তদের সংখ্যা কম ছিল। এবার কমপক্ষে পাঁচ লাখ ভক্ত সমবেত হবে বলে তারা আশা করছেন। ভক্তদের জন্য পর্যাপ্ত প্রসাদের ব্যবস্থা করছেন তারা। ভক্তদের জন্য এখানে এক সারিতেই করা আছে ৬২টি শৌচাগার।

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত গণমাধ্যমকে বলেন, উৎসব ঘিরে প্রতিবছর বসন্তপুর থেকে প্রেমতলী পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক থাকে। এবার পুলিশের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে এক হাজার জন করা হয়েছে। এ উৎসব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। এখানে নরোত্তম ভক্তরা এসে মুসলিমদের বাড়িতে থাকে পর্যন্ত। এবারও এই সম্প্রীতি বজায় থাকবে।