ঢাকা | ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪ - ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

যে কারণে চাকরি হারালেন হাথুরুসিংহে

  • আপডেট: Tuesday, October 15, 2024 - 9:39 pm

অনলাইন ডেস্ক: চান্দিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চুক্তি ছিল দুই বছরের।

আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। কিন্তু এর আগেই তাকে বিদায় করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। হাথুরুসিংহেকে শোকজ এবং সাসপেন্ড করার ঘোষণা দেন বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেটে স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন করে হাথুরুসিংহেকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি জানান বিসিবি সভাপতি ফারুক।

বেশ কিছু বিষয়ে তার ওপর অসন্তুষ্ট থাকায় হাথুরুকে শোকজ করেছে বিসিবি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে চূড়ান্তভাবে ছাঁটাই করা হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।

ভারতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় দল তারকা নাসুম আহমদকে চড় মারার অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনের জেরে চাকরি হারিয়েছেন হাথুরুসিংহে।

বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল ঘটনার তদন্তের জন্য। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফুর রহমান নোটিশ প্রেরণ করেছিলেন। অ্যাডভোকেট নাহিদুর রহমানের পক্ষে নোটিশটি পাঠানো হয়েছিল।

মূলত অসদাচরণের জন্যই হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দুই তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যেগুলি আসলে একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য খুব পীড়াদায়ক ছিল।

পাশাপাশি এটা দলের জন্যও খুব একটা ভালো উদাহরণ ছিল না। সেগুলি বিবেচনা করে আজকে আমরা তাকে একটা কারণ দর্শাও নোটিশ এবং দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির চিঠি দিয়েছি।

বিসিবি সভাপতি বলেন, একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার খারাপ লেগেছে। জাতীয় দলের ক্রিকেটার দেশের গৌরব, ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। ওই নামটা আর না নিই, ওটা ছিল কোচের অসদাচরণ। ভিকটিম, প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছি। প্রত্যক্ষদর্শীরও রিপোর্ট ছিল। তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আমি অনেক কাজ করেছি।

বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছিল সেদিন। ম্যাচে বিরতির সময় একাদশের বাইরে থাকা নাসুম আহমেদকে পানি নিয়ে মাঠে যেতে বলেন কোচ হাথুরুসিংহে।

সবকিছু গুছিয়ে পানি নিয়ে মাঠে যেতে নাসুমের ৩০ সেকেন্ড দেরি হয়। যে কারণে সেদিন তাকে চড় মারেন হাথুরু।

সেই ঘটনার যে একটা বড় ভূমিকা আছে তার বরখাস্ত হওয়ার পেছনে, সেটাও স্পষ্ট ফারুকের কথায়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, একজন জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে আপনি কখনোই শারীরিকভাবে আঘাত করতে পারেন না। এটার শাস্তি সেটাই, যেটা এখন হচ্ছে।

হাথুরুকে ছাঁটাই করতে আইনগত দিক খুঁটিয়ে দেখতে হয়েছে বিসিবিকে। হাথুরুকে বরখাস্ত করতে বিসিবির সুবিধা হয়েছে তার অতিরিক্ত ছুটি ভোগের কারণে। বিসিবিকে না জানিয়ে বছরে তার পাওনা ৪০ দিনের বেশি সময় কাটিয়েছেন হাথুরু। ফারুক বলেন, একজনের অসদাচরণের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়ার কিছু নেই। সে যে সময় ছুটি কাটিয়েছে, সেটা ৩ মাসের বেশি।

ওটাও অসদাচরণের অংশ। বিচ্ছিন্নভাবে তিনি ই-মেইলে জানিয়েছেন, তবে সেটা তিন মাসের বেশি হওয়ার সুযোগ নেই। আপনার জবাবদিহি থাকতে হবে। এখানে নিয়ম ভেঙেছেন, আমরা জানিয়েছি যে খেলোয়াড়ের সঙ্গে তার অসদাচরণ এবং একজন কর্মী হিসেবে নিজের অসদাচরণ।

হাথুরুসিংহের এমন ব্যবহারে সেদিন নাসুম কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন, উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। প্রধান কোচের এমন ব্যবহারের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন দলের ট্রেইনার এবং বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। ম্যাচ শেষে ক্রিকেটাররাও ঘটনাটি জানতে পারেন।