শিক্ষার সকল স্তরে ‘ইসলাম শিক্ষা’ বাধ্যতামূলকের দাবিতে মানববন্ধন
রাবি প্রতিনিধি: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী ইসলামিক স্কলারদের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং শিক্ষার সকল স্তরে ‘ইসলাম শিক্ষা’ বাধ্যতামূলকসহ ৬ দফা দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন হয়েছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
৬ দফা দাবির উল্লেখযোগ্য হলো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-র মূল কমিটিতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ‘ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিভাগ’ থেকে ইসলাম শিক্ষা সংশ্লিষ্ট পুস্তক প্রণয়নের জন্য ৪ জন এবং সকল স্তরে প্রণীত পুস্তকের শরয়ী বিষয়াদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ন্যূনতম ২ জন গ্রহণযোগ্য, বিতর্কমুক্ত, নির্ভরযোগ্য ও দক্ষ শিক্ষাবিদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিতর্কিত ও ভ্রান্ত-চিন্তা লালনকারী, ইসলাম বিদ্বেষী এবং দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতাদর্শের বহির্ভূত কাউকে এ কমিটিতে রাখা যাবে না।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর প্রণীত এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ সংশোধিত) প্রবিধান সংশোধন করে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রভাষক (আরবি, ফিক্হ, কুরআন, হাদিস ও লাইব্রেরিয়ান) এবং সহকারী মৌলভী (আরবি) ও সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গ্রাজুয়েটদের আবেদন করার সুযোগ পুনর্বহাল করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিকের সকল স্তরে ইসলাম শিক্ষা আবশ্যিকরণ করতে হবে। সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু নিশ্চিতকরণ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি সাহিত্য, ফিকহ, কোরআন, হাদিস ইত্যাদি বিভাগ নিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বা শরী’আ অনুষদ চালু করতে হবে। ইসলামিক সংশ্লিষ্ট বিভাগ ব্যতীত অন্যান্য বিভাগে ইসলাম শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়কে এঊউ এর অন্তর্ভুক্তকরণ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাসিবাদ উৎখাত করে সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া। নৈতিকতা বর্জিত একটা জেনারেশন গড়ার উদ্দেশে গত সরকারের আমলে পাঠ্যবইয়ে এলজিবিটিকিউ ও সমকামিতার মতো নোংরামি বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় শিক্ষক সমাজকে অপমান করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে নৈতিক শিক্ষা বলতে কিছু নেই।
এরপরেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে পাঠ্যবই সংস্কারের কমিটিতে যোগ্য ব্যক্তিরা স্থান পায়নি। বাংলার মুসলিম সমাজ শাহবাগী চেতনাকে মেনে নিবে না।’
মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাজুল ইসলাম। এ সময় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি আশারাফুজ্জামান, অধ্যাপক এম. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক এ. কে. এম. আব্দুল লতিফ, অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।