ঢাকা | নভেম্বর ১৮, ২০২৪ - ৪:৩২ পূর্বাহ্ন

পাটের ভালো দাম পাওয়ায় খুশি রাজশাহীর চাষিরা

  • আপডেট: Friday, August 30, 2024 - 7:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

বর্তমানে রাজশাহীর মাঠে মাঠে পাট কাটা, জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষি ও শ্রমিকরা। উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পাট। গত বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় খুশি চাষিরা। বাজারে মানভেদে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা পর্যন্ত।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় ১৭ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। আর গত বছর পাট চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। সেই হিসেবে পাটের চাষ কমেছে ২ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমির। এবার পাট চাষে অনুকূল আবহাওয়া ছিল। তাছাড়া দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে আবাদ বাড়বে।

পাট চাষিরা জানান, পাটের হাট সাধারণত ভোর বেলায় বসে। হাটবারে বিভিন্ন উপজেলার পাট কেনা-বেচা হয়। ভোর থেকে শুরু হয়ে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যেই পাট কেনা-বেচা শেষ হয়ে যায়। বাঘা উপজেলায় বসে দিঘাহাট। এই হাটে পাট কেনা-বেচা হয়েছে প্রকার ভেদে ২ হাজার ৩শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা মণ দরে।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, গত বছর পাটের ভালো দাম পেয়েছেন চাষিরা। এই দাম মৌসুমের শেষের দিকে আরও বেশি ছিল। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাটের দাম গড়ে ২০০ টাকা বেশি। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ধারণা এবার শেষ পর্যন্ত আশানুরূপ পাটের দাম পাবেন তারা।

বাঘার দিঘাহাট পাট বিক্রি করতে আশা মকুল হোসেন বলেন, পাটের বীজ বপনের সময়ে বৃষ্টিপাত ছিল না। ফলে অনেকের পাটের বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া অনেকেই পানির অভাবে পাটের বীজ বপন করেননি। তবে দুই সপ্তাহ আগেও পাট জাগ দেয়া নিয়ে এক দুশ্চিন্তা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিপাতের ফলে খালবিলে পানি জমায় সেই চিন্তা কেটে গেছে। এ বছর এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদন ধরা হচ্ছে ৭ থেকে ৮ মণ করে।

বাউসা আমরপুর গ্রামের পাট চাষি আমিরুল ইসলাম বলেন, জমিতে পানি থাকায় পাট কাটা শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে। বর্তমান বাজারে মানভেদে প্রতি মণ পাটের দাম ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। বাউসা হেদাতিপাড়া গ্রামের মকসেদ আলী জানান, গত শুক্রবার দিঘাহাটে ভ্যানে করে ৬ মণ পাট ১২ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। হাটে বাজারে পাটের চাহিদা ভালো আছে। বিক্রি করতে কোনো সমস্যা নেই।

পাট ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, নওগাঁয় প্রতি মণ পাটের দাম আমাদের চেয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি। কিন্তু এই এলাকার পাটের মান ভালো না হওয়ার কারণে দাম তুলনামূলক কম পাচ্ছেন চাষিরা।

পাট সংরক্ষণকারী দিঘা গ্রামের ব্যবসায়ী আজিজুল হোসেন বলেন, পাট কিনতে শুরু করেছি। চাহিদা ভালো আছে। এবার অন্য এলাকার পাট কম চাষ হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে স্থানীয়ভাবে পাটকল। এছাড়াও বিভিন্ন মোকামে পাটের চাহিদা আছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, এবার পাটের উৎপাদন ভালো হয়েছে। শুরু থেকেই পাটের ভালো দামও আছে। আশা করছি, চাষিরা ভালো লাভবান হবেন।