পবায় চেয়ারম্যান মুঞ্জিলসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা
স্টাফ রিপোর্টর: রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিলের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। দুটি মামলায় চেয়ারম্যান ছাড়াও আসামি করা হয়েছে ১৪ জনকে।
একটি মামলা দায়ের করেছেন পবার বেলুয়া খোলাবোনা এলাকার সাজ্জাদ হোসেন ও অপর মামলাটি দায়ের করেছেন একই এলাকার আবুল কালাম আজাদ। গত বুধবার রাতে দামকুড়া থানায় এ দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মুলত ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় ভোট দিতে বাধা ও মারপিটের অভিযোগে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে।
বাদি সাজ্জাদ হোসেন তার মামলায় উল্লেখ করেছেন, গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য আমি দামকুড়া থানার কসবা উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়। সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর আসামিরা আমাকে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বাঁধা প্রদান করে।
এসময় আমি আমার ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিল তার হাতে থাকা পিস্তল দেখিয়ে আমাকে গুলি করার হুমকি দেয়। একই সাথে মুঞ্জিলের হুকুমে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করা হয়। আমি প্রাণ ভয়ে নতুন কসবার রজবের বাড়ির সামনে পৌঁছিলে আসামি ও যুবলীগ নেতা বাবর আলী, জাহাঙ্গীর, সোহাগ, রাজিবের হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আমার সাইড দিয়ে চলে যায়।
আসামি বাদলের হাতে থাকা হাসুয়া ও পাসলি দিয়ে আমাকে কুপিয়ে ও মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। এতে আমার মাথায় ৬ ইঞ্চি পরিমাণ কেটে গর্ত হয়। তারা বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট করে। পরে আমার চিৎকারে লোকজন ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে। একই সাথে তারা আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। সেই সময় পরিবেশ ছিল না বলে মামলা করা সম্ভব হয়নি বলেও তিনি মামলায় উল্লেখ করেছেন।
আবুল কালাম আজাদ তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য আমিসহ সহযোগী বাবু (৪৫), হাবিবুর রহমান লালচান (৩৫), দামকুড়া থানার কসবা উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়। সেখানে উপস্থিত আসামিরা আমাদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বাঁধা প্রদান করে।
আমরা আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে আসামীরা হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদেরকে পিস্তল, ককটেল, দেশীয় হাঁসুয়া, পাসলি, রড, লাঠি, বাঁশ, হকসিক, জিআই পাইপ, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে ধাওয়া করে।
মামলার ১নং আসামী বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিলের হুকুমে তারা ধাওয়া করে। আমরা প্রাণ ভয়ে পালানোর সময় যুবলীগ নেতা বাবর আলী হত্যার উদ্দেশ্যে হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে আমাকে গুলি করে। কিন্তু আমি সরে যাওয়ায় আমাকে গুলি লাগে না।
পরে তারা আমার ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে। আসামি ইসমাইলের হাতে থাকা হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হয়। তারা আমার মাথায় আঘাত করলে রক্তাক্ত জখম হয়। তারা বাঁশের লাঠি, রড, জিআই পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট করে জখম করে।
দুই মামলার আসামিরা হলেন, হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মুঞ্জিল (৫৫), যুবলীগ নেতা বাবর আলী (৪৫), আ’লীগ নেতা সাইদুর রহমান বাদল (৬০), জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), সোহাগ (৩৫), রাজিব (৩৫), সাত্তার (৪০), ইসমাইল (৪৫), ইস্রাফিল (৪০), বিপ্লব বিপা (৩৫), আশরাফ (৬০), বজলু (৪৫)।
দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিুকুর রহজমান জানান, দুটি মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা সবাই ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।