আপাতত বন্যার শঙ্কা নেই রাজশাহী অঞ্চলে
স্টাফ রিপোর্টার: পদ্মাসহ রাজশাহী অঞ্চলের নদীগুলোতে পানি ফের বাড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ১০ দিন এ অঞ্চলে বন্যার কোনো শঙ্কা নেই।
মূলত গত শুক্রবার সকাল থেকে নদীগুলোতে পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার প্রতি তিন ঘণ্টায় এক সেন্টিমিটার করে পদ্মা নদীতে পানি বেড়েছে। এদিন সকাল ৬টায় পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির লেভেল ছিল ১৬ দশমিক ২০ মিটার। সন্ধ্যা ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ২৪ মিটার। যা বিপৎসীমার ২ দশমিক ২৬ মিটার নিচে।
পাউবোর গেজ রিডার এনামুল হক জানান, গতকাল শনিবার বেলা ৩টায় পানির উচ্চতা একই পাওয়া গেছে। ফলে এখন রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ২ দশমিক ২৬ মিটার নিচে রয়েছে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার রাতে উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে পদ্মায় পানি বেড়েছে। গত শুক্রবার রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হলেও নদীর পানি বাড়েনি। ২০১৩ সালে একবার পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এর পর আর তা হয়নি।
এদিকে বন্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে মনে করেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোকলেসুর রহমান। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, আমরা আগে পাঁচ দিনের পূর্বাভাস দিতাম। এখন সেটি বাড়িয়ে ১০ দিন করা হয়েছে। ফলে আগামী ১০ দিনেও গঙ্গা-পদ্মার পানি ডেঞ্জার লেভেল ক্রস করার কোনো আশঙ্কা নেই। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের বড় নদীরগুলোর মধ্যে মহানন্দা, পুনর্ভবা, আত্রাই ও বারনই নদীরও পানি ডেঞ্জার লেভেল অতিক্রম করার আশঙ্কা নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, রাজশাহী অঞ্চলের বড় নদীরগুলোর মধ্যে মহানন্দা নদীর ডেঞ্জর লেভেল ২০ দশমিক ৫৫ মিটার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পয়েন্টে সন্ধ্যা শুক্রবার ৬টায় এ নদীর পানির লেভেল ছিল ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর সকাল ৬টায় ছিল ১৮ দশমিক ৪৬ মিটার। অপরদিকে, পুনর্ভবা নদীর ডেঞ্জার লেভেল ২১ দশমিক ৫৫ মিটার। এ নদীতেও শুক্রবার ১২ ঘণ্টায় চার সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় এ নদীর চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পয়েন্টে পানির লেভেল ছিল ১৮ দশমিক ৫৮ মিটার।
একই ভাবে বেড়েছে আত্রাই নদীর পানিও। নাটোরের সিংড়া পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টায় আত্রাই নদীর পানির লেভেল ছিল ১০ দশমিক ৮১ মিটার। এ নদীর ডেঞ্জার লেভেল ১২ দশমিক ২০ মিটার। যা বিপৎসীমার ১.৩৯ মিটার নিচে। আর বারনই নদীর ডেঞ্জার লেভেল ১৩ দশমিক ৯৬ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ নদীর পানির লেভেল ছিল ১২ দশমিক ৩০ মিটার। যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৬ মিটার নিচে। এদিকে, উজানের ভারী বৃষ্টির কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলের খাড়িগুলো (খাল) উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে রাস্তাঘাট ও কালভাট (ব্রিজ) ভেসে গেছে। বিশেষ করে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বেশকিছু খাড়ি উপচে পড়ে আশাপাশের মাঠগুলো প্লাবিত হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের বড় নদ-নদীগুলোর মধ্যে বারণই নদে পানি বাড়ছে ভারী বর্ষণের কারণে। তবে গতকাল শনিবার থেকে আগামী ১০ দিনেও রাজশাহী অঞ্চলে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।