ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর
অনলাইন ডেস্ক: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছেন তারা।
শনিবার বেলা সাড়ে ১০টায় রুয়েট প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ সমাবেশ শুরু করেন তারা।
পরে, রুয়েটের প্রধান ফটকের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাবির প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে দেন।
এসময় গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্যকে ভিডিও করতে দেখে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তার ওপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আজকের কর্মসূচিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) প্রায় ৫০ জন শিক্ষক অংশ নিয়েছেন।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘এক দুই তিন চার, স্বৈরাচার তুই গদি ছাড়’, ‘শিবির ট্যাগের ছলচাতুরী, বুইজা গেছে জনগণ’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বৈরাচারের পদত্যাগ’, ‘নয় ছয় বুজিনা, কবে যাবি হাসিনা’, ‘আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।
রুয়েট শিক্ষার্থী তানভির হাসান বলেন, সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে আজকে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এখানে আমাদের একটাই দাবি স্বৈরাচার সরকার পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থী সমাজ আর ঘরে ফিরবে না।
এ আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। পুলিশ প্রশাসন আমাদের ভাইদের উপর গুলিয়ে চালিয়েছে, তাদেরকে বলবো এখন সাবধান হোন। আপনাদেরও ছেলে-মেয়ে আছে, তাদের দিকে তাকান।
রাবি শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, আবু সাঈদের মতো জীবন দিতে আজকে মাঠে নেমেছি। হয়তো জীবন দিবো না হয়তো স্বৈরাচার সরকার পদত্যাগ করে মাঠ ছাড়বো। আমার ভাইগুলোর রক্তের দাগ বাংলার জমিনে এখনো শুকায়নি। কি দোষ ছিল তাদের। তারা সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারের কথা বলেছিল। আজকে আমাদের আন্দোলনের দাবি একটা, স্বৈরাচার সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরা তাদের সাথে যোগ দিয়েছি। আর কত ঘরে বসে আমার ছেলেদের রক্ত দেখবো। শিক্ষার্থীদের গায়ে গুলি করতে স্বৈরাচার সরকারের কি একটুও বুক কাঁপেনি? আজ থেকে এ আন্দোলনে গুলি চালালে সেই গুলি আগে শিক্ষকদের গায়ে লাগবে, তারপর আমাদের ছাত্রদের।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আর কোন ভয় পাবার কারণ নেই তাদের পিতৃতুল্য শিক্ষকরা আজ থেকে তাদের সামনে থাকবেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি এবং তাদেরকে সুরক্ষা দিতে সবসময় তাদের সাথেই আমরা আছি।
গণহত্যার দায় স্বীকার করে স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন এ অধ্যাপক।