ঢাকা | মে ১৩, ২০২৫ - ১২:০১ পূর্বাহ্ন

চিকিৎসা নিতে আর্থিক সংকটে পড়েন দেশের ৬১% মানুষ

  • আপডেট: Tuesday, July 16, 2024 - 10:54 am

অনলাইন ডেস্ক: চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে দেশের ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন, যা মোট দারিদ্র্যের ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া চিকিৎসা সেবা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ৬১ শতাংশ মানুষ অর্থ সংকটে পড়েন। প্রায় ২৭ শতাংশ মানুষ ঋণ করে স্বাস্থ্যসেবা নেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস-এর ‘বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য অভিঘাতের ফলে বাংলাদেশে দারিদ্র্য’ শীর্ষক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ পারিবারিক আয়-ব্যয় জরিপ-২০২২ এর ভিত্তিতে এ গবেষণা চালানো হয়। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সংস্থার রিসার্চ ফেলো ড. আব্দুর রাজ্জাক। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

অন্যদেশগুলোর তুলনায় খরচ বেশি হলেও বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ সবচেয়ে কম। বাংলাদেশে এ খাতে বরাদ্দ মাত্র ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ, যেখানে আফগানিস্তানে ২১ শতাংশ; মালদ্বীপে বরাদ্দ ১০ শতাংশ। এ কারণে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়। ক্যান্সার চিকিৎসায় এ ব্যয় ৬ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করতে হয়‍।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি পরিবারের এক সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হলে গড়ে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। এ খরচের প্রায় ২৫ শতাংশ ওষুধের পেছনে চলে যায়। হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে ৫৪ শতাংশ ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়। এসব ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েন।

স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বহন করতে অধিকাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙেন, ঋণ করেন ও সম্পদ বিক্রি করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋণ করে স্বাস্থ্য সেবার ব্যয় বহন করতে হয় ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ মানুষের। ৩২ দশমিক ৫৮ শতাংশ খরচ করেন সঞ্চয় ভেঙে। বন্ধু বান্ধবের কাছ সহায়তা নেন ১৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে সম্পদ বিক্রি করে দিতে হয়।
প্রতিবেদনে মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় কমাতে ইন্স্যুরেন্স ব্যবস্থা প্রণয়নের পরামর্শ দেন বিআইডিএসের গবেষক ড. আব্দুর রাজ্জাক সরকার। গত কয়েক বছর ধরে দেশে ওষুধের দাম বাড়ছে বলেও তিনি জানান।

বিনায়েক সেন বলেন, দেশে স্বাস্থ্য বীমা চালু করা প্রয়োজন, যেখানে মালিকপক্ষ তার কর্মীদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য অর্থ দেবে। তবেই চিকিৎসা ব্যয় অনেক কমে যাবে। জার্মানিতে ইউনিভার্সাল হেল্থ কেয়ার নিতে ১২৭ বছর লেগেছিল। ভারত ও চীনের ৪০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবীমার আওতায় এসেছে। এসব দেশে বীমার আওতায় আনতে ১২ বছর সময় লেগেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া সামান্য সর্দি জ্বর হলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এন্টি মাইক্রোবিয়াল রেসিস্টেন্ট ভয়ানক একটা জিনিস। এ প্রসঙ্গে ডিজি ড্রাগকে আরও শক্ত হতে হবে। ফার্মেসিতে গিয়ে কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন সিস্টেম চালুর চেষ্টা করছি। ইলেকট্রনিক প্রেসক্রিপশন সিস্টেম যদি চালু করা যায়, তাহলে যথাযথ মনিটরিং সম্ভব হবে; ওষুধের যথেচ্ছ ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

 

সোনালী/সা

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS