ক্লাস চলাকালে অজ্ঞাত কারণে অসুস্থ ১৫ শিক্ষার্থী
অনলাইন ডেস্ক: প্রথমে দেখলে যে কারো মনে হবে এ যেন এক অসুস্থতার প্রতিযোগিতা। অসুস্থ ব্যক্তিকে কেউ দেখলেই তিনিও হচ্ছেন অসুস্থ। তবে কী কারণে অসুস্থ হচ্ছেন তা এখনো সবার কাছেই অজ্ঞাত এক আতঙ্ক।
জানা যায়, সোমবার সকালে ওই বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরা একের পর এক অসুস্থ হতে শুরু করে। এতে অন্তত ১৫ জন ছাত্রী অজ্ঞাত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গত দুই দিন ধরে ওই বিদ্যালয়ে ঘটছে এমন বিস্ময়কর কাণ্ড। তবে কেন অসুস্থ হচ্ছে, কেনই বা অস্বাভাবিক আচরণ করছে তার কিছুই বলতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং এলাকা জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, এ স্কুলের মোট ৭৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে নতুন ভবনে প্রায় ৪০০ ছাত্রী ও পুরান ভবনে ৩৫০ জন ছাত্ররা ক্লাস করছে। গত দু-তিনদিন পূর্বে নতুন ভবনে একটি কক্ষে ‘খ’ বিভাগের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর হঠাৎ করে মাথা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট দেখ দেয়; পরে সে অসুস্থ হয়ে যায়। পরে চিকিৎসা দিয়ে অভিভাবকদের মাধ্যমে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, একদিন পরে একই ক্লাসে আরও একজন ছাত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পরপরই তাকে দেখে আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিদ্যালয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরপর অন্য শিক্ষার্থীরাও একের পর এক অসুস্থ হতে শুরু করে। সোমবার হঠাৎ করে অষ্টম শ্রেণির অন্তত ১২ জন ছাত্রী অজ্ঞাত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা অনেকেই চিকিৎসা নিয়েছে হাসপাতালে, বাকিদের অভিভাবকদের মাধ্যমে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয় সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীরা।
কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে এমন খবর পেয়ে তারা বিদ্যালয়ে আসেন। পরে দুই-একজন ব্যতীত অনেকেই তাদেরকে চিনতে পারেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম যুগান্তরকে বলেন, সোমবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাই স্কুলের ৪ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়, পরে তারা সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে গেছেন।
কী কারণে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা হয়ে এমনটি হতে পারে। অথবা কিছু একটা দেখে হয়ত আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। একজনকে দেখে আরেক জনের ভয় পেয়ে এমনটি হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই (কিশোর-কিশোরী) বয়সের মধ্যে এমন প্রভাব বেশি দেখা যায়। তবে আতঙ্কিত হওয়ায় কিছু নেই। এমন অজ্ঞাত কারণে অসুস্থতার ঘটনা অনেক সময় ঘটে, তবে এটি কোনো ধরনের অলৌকিক বিষয় নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ক্লাস চলাকালীন সময় স্কুলের ছাত্রীরা অসুস্থ হওয়ার সংবাদ পেয়েছি আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনে যাব।
সোনালী/সা