৪৬ হাজার কোম্পানি বন্ধ, পতনের মুখে ইসরাইল
অনলাইন ডেস্ক: ইসরাইল অধিকৃত গাজায় আগ্রাসন চালাতে গিয়ে দেশটির অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক প্রভাব পড়েছে। এরই মধ্যে ৪৬ হাজার ইসরাইলি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম মারিভকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কোফেস বিডিআইয়ের (CofaceBdi) নির্বাহী পরিচালক (সিইও) ইওয়েল আমির বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, গাজা যুদ্ধ শুরু থেকে অধিকৃত অঞ্চলে ৭৭ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৫ হাজার ছিল ছোট আকারের; যেগুলো সর্বোচ্চ পাঁচজন কর্মচারী দিয়ে পরিচালিত হত। এমনকি চলতি বছরের শেষ নাগাদ ৬০ হাজার ইসরাইলি কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কোফেস বিডিআইর সিইও।
এদিকে, ইসরাইলি সূত্রের বরাত দিয়ে মেহের নিউজ জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধের ফলে দখলকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন বাণিজ্যিক খাত বিশেষ করে শিল্প, পর্যটন, কৃষি ও সেবা খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অঞ্চলগুলোতে এখন বিদেশি পর্যটক নেই বললেই চলে।
ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে, ইসরাইলি কোম্পানিগুলো খুব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্রমের ঘাটতি, বিক্রয় হ্রাস, সুদের উচ্চ হার, পরিবহন ও কারিগরী সমস্যা, কাঁচামালের ঘাটতি এবং যুদ্ধকবলিত অঞ্চলে কৃষি জমিতে প্রবেশাধিকারের ঝুঁকি এবং সেই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অধিগ্রহণ খরচ।
এদিকে, ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দখল করা ভূখণ্ডে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর রকেক ও ড্রোন হামলা স্থানীয় ব্যবসাকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কারণ এসব হামলার কারণে হাজার হাজার ইহুদি বসতি স্থাপনকারীকে তাদের বসতি সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়া হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে লেবাননের সঙ্গে যে কোনো পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ইসরাইলের অর্থনীতিকে পতনের অতল গহ্বরে নিয়ে যাবে বলেও উদ্বেগও সৃষ্টি হয়েছে।
হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম মারিভের প্রতিবেদন অনুসারে, হিজবুল্লাহ সম্প্রতি তাদের হুদহুদ ড্রোনের সাহায্যে ধারণ করা ভিডিওর মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা ইসরাইলের জ্বালানি অবকাঠামো, যেমন- তেল শোধনাগার এবং গ্যাস ট্যাঙ্কগুলোতে যে কোনো সময় আক্রমণ করতে পারে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনি সামরিক বাহিনী ও হুথিদের নৌ-অভিযানও ইসরাইলের অর্থনীতি ধ্বংসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইসরাইলি সূত্র মতে, হুথিদের হামলার ফলে দেশটির প্রধান বন্দর ইলাতের রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিনের অসহায় ও নিপীড়িত জনগণের বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে ব্যাপক গণহত্যা শুরু করেছে।
অন্যদিকে, গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো এবং লেবানন, ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ার অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে যে, তারা দখলদার ইসরাইলি সরকারের কাছ থেকে এসব অপরাধের মূল্য আদায় করবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বর্বর ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। যার মধ্যে গত দু দিনেই চার শতাধিক হতাহত হয়েছেন।
সোনালী/সা