ঢাকার সমাবেশ থেকে গুচ্ছ কর্মসূচি দেবে বিএনপি
অনলাইন ডেস্ক: খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দুর্নীতি এবং ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি ও সমঝোতার প্রতিবাদসহ নানা ইস্যুতে কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে জনসম্পৃক্তমূলক গুচ্ছ কর্মসূচি দেবে দলটি। এ নিয়ে দলের সিনিয়র নেতা, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শনিবার বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এতে সমাবেশ, বিক্ষোভ, পদযাত্রা, গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণের মতো কর্মসূচির প্রস্তাব দেন নেতারা।
একই সঙ্গে সমমনা দল ও মিত্রদের কাছ থেকে প্রস্তাবনা নেওয়া হচ্ছে। আজ রাতে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে এসব প্রস্তাব চূড়ান্ত হতে পারে। প্রথমে শুক্রবার অথবা শনিবার রাজধানী ঢাকায় সমাবেশের কর্মসূচি দিতে পারে। ওই সমাবেশ থেকে গুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে ।
সমমনা দলগুলোর সঙ্গেও যুগপৎভাবে বেশকিছু কর্মসূচি আসতে পারে। আজ রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আগামী দিনের জন্য নতুন কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।
জানা যায়, বিভিন্ন ইস্যুতে কর্মসূচি নির্ধারণে কয়েকদিন ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি অঙ্গ-সংগঠনের মতামত গ্রহণ করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকাল থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দুই দফায় দলের যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও অঙ্গ-সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভার্চুয়ালি ওই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তি, দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তির প্রতিবাদে সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। নেতারা ইস্যুভিত্তিক জনম্পৃক্ত কর্মসূচির প্রস্তাবনা দেন। তিন মাসের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার প্রস্তাবও দেন তারা। এছাড়া বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের রেল চলাচলের করিডর ইস্যুকে দেশের জন্য বড় হুমকি হিসাবে দেখছে বিএনপি। দলটির নেতারা জানতে পেরেছেন, চলতি মাসেই ভারত সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী পরীক্ষামূলকভাবে রেল করিডর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু করবে। এজন্য করিডর চুক্তি বাতিলের দাবিতে সারা দেশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলায় পদযাত্রা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির প্রস্তাব দেন বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারা।
অভিন্ন তথ্য দিয়ে বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্তত ৪ নেতা জানান, চলতি বছরই আবারও সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে চান বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। এজন্য নভেম্বরের আগ পর্যন্ত চলমান ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের চাঙা করতে চান তারা। পাশাপাশি জনগণকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে সব ধরনের চেষ্টা থাকবে দলটির।
এই সময়ে তৃণমূল থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঢেউ তুলে চূড়ান্ত ধাপের কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি।
দলীয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে একগুচ্ছ কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া শুক্র কিংবা শনিবার ঢাকায় সমাবেশ করার প্রস্তুতি রয়েছে দলটির। এজন্য গত দুইদিন ঢাকার পাশের জেলাগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করেছেন সাংগঠনিক নেতারা। একগুচ্ছ সম্ভাব্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এরই মধ্যে জেলা, মহানগর ও বিভাগীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন দায়িত্বশীলরা।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জনগণ সোচ্চার। এ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তির প্রতিবাদে দেশের মানুষ আন্দোলন করছে। ভারতীয় ট্রেনের জন্য যে করিডর চুক্তি হয়েছে, তা জাতির জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে। আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। দেশের স্বার্থেই বিএনপি কর্মসূচি দেবে। শিগ্গিরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফেরানোর দাবি এবং ভারতের সঙ্গে স্বার্থবিরোধী চুক্তি, সরকারের দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কর্মসূচি আসবে।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, দল থেকে যে কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমরা সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে তা বাস্তবায়ন করব। এবার আমাদের চেষ্টা থাকবে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনগণকে সম্পৃক্ত করার। প্রতিটা কর্মসূচি যাতে সফল হয়, সেই চেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো দ্রুত সুসংগঠিত করার কাজ চলমান থাকবে।
সোনালী/সা