ঢাকা | নভেম্বর ১৮, ২০২৪ - ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি

  • আপডেট: Saturday, July 13, 2024 - 5:00 pm

বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাগমারার দামনাশ বাজারের ফিড ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে অ্যাসিড মেরে ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীর মুখমণ্ডল ঝলসে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর নিরাপত্তা ও প্রতিকার চেয়ে তার বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের দামনাশ পারদামনাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির এক মেধী ছাত্রীকে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় দামনাশ বাজারের নারিশ পোলট্রি ফিড ডিলার বেলাল হোসেন প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বেলাল হোসেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।

তিনি ব্যবসা করার নামে দামনাশ বাজারে এসে প্রায় ছয় মাস ধরে ওই ছাত্রীকে অপহরণের এবং অ্যাসিড ছুড়ে মেরে মুখমণ্ডল ঝলসে দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এতে ওই ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এসব ঘটনায় এর আগেও থানায় জিডি করাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বখাটে ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনকে দুই মাসের মধ্যে অন্যত্র বিয়ে করতে হবে, দিনের বেলায় দোকানে আসতে পারবে না এবং ওই ছাত্রীর চোখের আড়ালে থাকতে হবে মর্মে মুচলেকা দিয়ে তিনি রক্ষা পান। এরপর ওই ছাত্রী আবার স্কুলে আসা-যাওয়া শুরু করে। কিন্তু মাত্র এক মাস যেতে না যেতেই বুধবার সকালে দামনাশ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানের লিচুবাগানের পাশ দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় বেলাল হোসেন ওই ছাত্রীর দুই হাত চেপে ধরে বোতল থেকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার চেষ্টা করেন।

এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে গোবিন্দপাড়া ইউপির সাবেক সদস্য মকলেছুর রহমান ও স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ রানাসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ‘অ্যাসিডের আক্রমণ’ থেকে ওই ছাত্রী রক্ষা পায়। এ সময় ওই বখাটে বেলাল হোসেন পালিয়ে যান।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা ইসাসমিন বলেন, ওই ছাত্রী অত্যন্ত মেধাবী। সে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্রী। তার রোল নম্বর ১। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই সে আর স্কুলে আসছে না।

ওই ছাত্রীর বাবা জানান, নিরাপত্তার অভাবে মেয়েকে এখন আর স্কুলে পাঠাতে পারছেন না। প্রশাসন যদি তার মেয়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে এবং ওই বখাটের বিরুদ্ধে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তার মেয়ের লেখাপড়া হয়তো এখান থেকে শেষ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ওই বখাটেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ জন্য হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোনালী/জেআর