ঢাকা | অক্টোবর ১৮, ২০২৪ - ৮:০৭ পূর্বাহ্ন

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

  • আপডেট: Saturday, July 13, 2024 - 11:07 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বর্ষা মৌসুমে মানুষের অন্যতম যাতায়াত বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নৌকা বা কোসা। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বর্ষার আগমনে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা বা কোসার চাহিদা বেড়েছে। ফলে এ উপজেলায় নৌকা তৈরি ও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। নৌকা তৈরিতে কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা রাতদিন একটানা কাজ করেও চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছেন।

গত বছরের তুলনায় এ বছর নৌকা বা কোসা তৈরির কাঠ ও অন্যান্য সরঞ্জামের দাম প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় নৌকা তৈরির কারিগররা আর্থিকভাবে লাভবান না হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বড় পাঙ্গাশী ইউনিয়নের, গয়হাট্রা, চঁন্দ্রগাতীসহ বিভিন্ন স্থানে ৩০টি কারখানায় কারিগররা নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটছে, কেউ বা হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক লাগাতে ব্যস্ত।

নৌকা তৈরির কারখানার মালিক রজব আলী, গোলাম মোস্তফা শাহ আলম, আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই এলাকায় বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় নৌকা তৈরি করে আসছে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি নৌকা বিক্রি করা যায়। বড় নৌকার চেয়ে ছোট ডিঙ্গি ও কোসা নৌকার চাহিদা বেশি। এতে প্রতিটি ১২ হাতের নৌকা বানাতে ১ হাজার থেকে ১২ শত টাকা খরচ হয়। প্রতিটি নৌকা বিক্রি করা যায় প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। কাঠ ও লোহাসহ নৌকা তৈরির সরঞ্জামের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় আগের মতো আর লাভ হয় না। তাই পুর্ব পুরুষের এই ব্যবসা কোনো মতে ধরে আছি।

উপজেলা চঁন্দগাতী ও গয়হাট্টা নৌকা তৈরির কারিগর মোন্নাফ আলী, নবা, গোনেশ, আমজাদ দিদার জানান, বর্ষা মৌসুম এলে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকি। এই সময় নৌকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা অতিরিক্ত কিছু আয় করতে পারি। আর অন্যন্য মাসে কাজ ও ইনকাম কম থাকলেও বর্ষা সময় আসলে পুরো বছরের চাহিদা পুরণ হয়ে যায়।

একজন ব্যক্তি একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে একদিন সময় লাগে। এই ছোট নৌকা তৈরির মুজুরী ৮ থেকে ৯ শত টাকা পাওয়া যায়। একটি ১২ ফুটের নৌকা বানাতে ২ জন মিস্ত্রির এক দিন সময় লাগে। বড় নৌকার মজুরী ১২শত থেকে ১ হাজার থেকে ১২শত টাকা। তবে নৌকা তৈরির সরঞ্জামের দাম বাড়লেও বাড়েনি আমাদের শ্রম মুজুরির দাম।

নৌকা কিনতে মোহনপুর ইউনিয়নের ডুবডাঙ্গা থেকে আলামিন বলেন, বর্ষা মৌসুম এলেই নিচু এলাকাতে নৌকার প্রয়োজন দেখা দেয়। তাছাড়া আমাদের কিছু গ্রামে নিচু হওয়ায় বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে যায়। নৌকা ছাড়া চলাচলের কোনো উপায় থাকে না। তখন নৌকাই একমাত্র যাতায়াতের ভরসা। তাছাড়া অনেকেই পুরাতন নৌকা মেরামত করে নিচ্ছেন ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য।